রাঁচি: ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক সংকট আপাতত মিটল বলা যায়। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হল চম্পাই সোরেনের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। ৪৭ জন বিধায়ক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ২৯টি। মুখ্য়মন্ত্রীর পদ থেকে হেমন্ত সোরেনের ইস্তফা এবং জমি কেলেঙ্কারি মামলায় তাঁকে ইডি গ্রেফতার করার পর, গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি), ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন চম্পাই সোরেন। এদিন, নবগঠিত সরকারকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হত। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন চম্পাই সোরেন।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা প্রধান হেমন্ত সোরেন ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে এই রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। ৩১ জানুয়ারি, হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ১ ফেব্রুয়ারি, রাজ্যের তৎকালীন পরিবহন মন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিশিষ্ট নেতা চম্পাই সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করেন রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ। হেমন্ত সোরেন আপাতত ইডির হেফাজতে আছেন। তবে, এদিন তাঁকে আস্থা ভোটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল রাঁচির একটি বিশেষ আদালত। এদিন, রাজ্য বিধানসভায় আস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন বলেন, “আমি গর্ব করে বলছি, আমি হেমন্ত সোরেন পার্ট-২।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজ্যে ১৫০ বছর ধরে খনির কাজ হয়। কিন্তু এখানকার মানুষ এক টুকরো লোহা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখেনি। আপনারা রাজ্যের যে কোনও গ্রামে গিয়ে দেখবেন, প্রতিটি বাড়ি হেমন্ত সোরেনের প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মানুষকে ছুঁতে পেরে গর্বিত। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে। আজ গোটা দেশ দেখছে হেমন্ত সোরেনের প্রতি কতটা অবিচার করা হচ্ছে।যে জমি চুক্তির অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই সম্পত্তি তাঁর নামে নেই। তাও তাঁকে জেলে পাঠানো হচ্ছে। যখনই কোনও আদিবাসী ব্যক্তি সরকার চালায়, তখনই সেই সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ”
চম্পাই সোরেন সরকারের আস্থা ভোটে জয় অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। ঝাড়খণ্ড বিধানসভায়, ইন্ডিয়া জোটের হাতে মোট ৪৭টি আসন রয়েছে। আর এনডিএ জোটের হাতে রয়েছে ৩২টি। তবে, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ হতে পারে আশঙ্কায়, আস্থা ভোটের আগে ইন্ডিয়া জোটের সকল বিধায়কদের, হায়দরাবাদের এক রিসর্টে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছিল। বিজেপি কটাক্ষ করেছিল, দলীয় বিধায়কদের অন্যত্র উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া ইন্ডিয়া জোটের নিজেদের বিধায়কদের উপর অনাস্থারই পরিচয়।