রায়পুর: পঞ্জাবের পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়(Chhattisgarh)-এও চরমে উঠেছে দলীয় কোন্দল। মুখ্যমন্ত্রী বদল হবে কিনা, সেই জল্পনার মাঝেই শনিবার এক বিশেষ ঘোষণা করলেন দলনেত্রী তথা কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। শনিবারই তিনি জানালেন, এবার থেকে “এক নেতা, এক পদ” নীতিতেই পরিচালিত হবে কংগ্রেস।
সনিয়া গান্ধীর এই ঘোষণার পরই দলের রাজ্য ইউনিটে চারজন নতুন সদস্য়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পদ বদল করা হয় চারজন সহ-সভাপতিরও। তিনজন সাধারণ সম্পাদক, জনসংযোগ বিভাগের শীর্ষকর্তার পদেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, আপাতত এক নেতা, এক পদ(One Leader, One Post)-এই ফর্মুলা মেনেই দলের সাংগঠনিক স্তর সাজাতে চাইছে কংগ্রেস। গতকাল যাদের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে, তারা সম্প্রতিই রাজ্যকমিটির সভাপতি বা সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। গিরীশ দেবাঙ্গন, অটল শ্রীবাস্তব, ভানুপ্রতাপ সিং ও পদ্ম মনোহর নামক চার কংগ্রেস সদস্যকে সহসভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের বদলে দায়িত্ব পান অরুণ সিংঘানিয়া, পিআর খুন্তে, অম্বিকা মারকম ও বাণী রাও।
বাসুদেব যাদব, অমরিজিৎ চাওলা ও সুমিত্রা ধৃতলহরেকেও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের বদলে ওই পদে দায়িত্ব পেয়েছেন দ্বারকা প্রসাদ যাদব, উত্তম বাসুদেব ও পঙ্কজ শর্মা। জনসংযোগ বিভাগের প্রধান শৈলেশ নীতিন ত্রিবেদীকেও সরিয়ে তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে সুশীল আনন্দ শুক্লাকে।
এ দিকে, গতকালই ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল(Bhupesh Baghel)-কে আসন্ন উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে কংগ্রেসের মুখ্য পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। এর আগে তিনি অসমের বিধানসভা নির্বাচনেও দলীয় কর্মীদের বুথস্তরের প্রশিক্ষণ শিবিরের দায়িত্ব সামলেছেন।
এদিকে, দলের অন্দরেই মুখ্য়মন্ত্রী পদ থেকে ভূপেশ বাঘেলকে সরানোর জন্য দাবি করেছে এক পক্ষ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিএস দেও (TS Deo) গত মাসেই দাবি জানান যে, ২০১৮ সালে কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন চুক্তি হয়েছিল যে আড়াই বছর ভূপেশ বাঘেল মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। বাকি আড়াই বছর তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকার কথা থাকলেও পদ ছাড়ছেন না বাঘেল। এরই জবাবেই মুখ্যমন্ত্রী বাঘেল জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই ক্ষমতা হাতবদলের কথা বলা হচ্ছে।
বিরোধ মেটাতে রাহুল গান্ধী, ছত্তীগসগঢ়ের ইনচার্জ পিএল পুনিয়া ও কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করেন ভূপেশ বাঘেল ও টিএস দেও। নিজেদের মধ্যে সমস্যার পাশাপাশি সরকারি কাজ নিয়ে কী কী ক্ষোভ রয়েছে, তাও জানান। পরে ফের একবার দিল্লি সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। সেই সময়ই তিনি রাহুল গান্ধীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে কতটা উন্নয়ন হয়েছে, তা দেখে আসার জন্য। চলতি সপ্তাহেই রাহুল গান্ধীর ছত্তীসগঢ় সফরে যাওয়ার কথা।