CJI Chandrachud: ‘সিকিওরিটি ডেকে, ওঁকে বের করে দিন’, রুদ্রমূর্তি প্রধান বিচারপতির

CJI Chandrachud: মঙ্গলবার, শীর্ষ আদালতে নিট-ইউজি পরীক্ষা মামলার শুনানি চলাকালীন রুদ্রমূর্তি দেখা গেল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের। নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে বিশিষ্ট আইনজীবী ম্যাথিউস নেদুমপারাকে কক্ষ থেকে বের করে দিতে বললেন তিনি। কী করেছিলেন ওই বিচারপতি?

CJI Chandrachud: 'সিকিওরিটি ডেকে, ওঁকে বের করে দিন', রুদ্রমূর্তি প্রধান বিচারপতির
রুষ্ট প্রধান বিচারপতিImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Jul 23, 2024 | 11:48 PM

নয়া দিল্লি: নিট-ইউজি পরীক্ষা আর নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু মঙ্গলবার, এই মামলার শুনানি চলাকালীন মেজাজ হারালেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। বিশিষ্ট আইনজীবী ম্যাথিউস নেদুমপারা বারবার আদালতের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ায়, নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে তাঁকে কক্ষ বের করে দিতে পর্যন্ত বললেন তিনি। আবেদনকারীদের পক্ষে হাজির হওয়া বিশিষ্ট আইনজীবী নরেন্দ্র হুডা তাঁর যুক্তি পেশ করার মধ্যেই, নেদুমপারা তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন। প্রথমে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ভালভাবেই নেদুমপারাকে বলেছিলেন, নরেন্দ্র হুডার বলা শেষ হওয়ার পর তিনি তাঁর যুক্তি দিতে পারেন। কিন্তু, নেদুমপারা নিজেকে আদালতে হাজির আইনজীবীদের মধ্যে সবথেকে সিনিয়র বলে দাবি করার পরই রেগে যান প্রধান বিচারপতি।

নেদুমপাড়া বলেন, “আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি। আমি এখানকার সমস্ত আইনজীবীদের মধ্যে সবথেকে সিনিয়র। আমি আদালত বন্ধু।” প্রধান বিচারপতি বলেন, “না। আমি কোনও আদালত বন্ধু নিয়োগ করিনি।” এরপরও নেদুমপারা আদালতের কাজে বাধা দিতে থাকেন। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “আমি আপনার উত্তর শুনতে চাই না। আপনি বসুন, না-হলে আমি আপনাকে আদালত থেকে বের করে দেব।” নেদুমপারা পাল্টা জবাব দেন, “আপনি যদি আমাকে সম্মান না করেন, তবে আমি নিজেই চলে যাব।” এরপরই নেদুমপারার উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি আপনাকে সতর্ক করছি। আপনি গ্যালারিতে বসে কথা বলবেন না। আমি আদালতের দায়িত্বে আছি। নিরাপত্তারক্ষীদের ডাকুন, ওকে বের করে দিন।”

এরর নেদুমপারা জানান, তিনি চলে যাচ্ছেন। প্রধান বিচারপতি তাঁকে জানান, এটা তাঁকে মুখে বলতে হবে না। এমনিই তিনি চলে যেতে পারেন। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “আমি গত ২৪ বছর ধরে বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত। আদালত কীভাবে চলবে, তা আইনজীবীদের তা বলার অধিকার নেই।” নেদুমপারা বলেন, “আমি ১৯৭৯ সাল থেকে যুক্ত।” প্রধান বিচারপতি এরপর তাঁকে সতর্ক করে জানান, নেদুমপারা যদি এমন আচরণ করে যান, তাহলে তাঁকে কোনও কড়া নির্দেশ জারি করতে হতে পারে। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির পক্ষে আদালতে উপস্থিত, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও নেদুমপারার আচরণের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “তাঁর আচরণ অবমাননাকর।”

এরপর নেদুমপারা কিছুক্ষণের জন্য আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন। পরে অবশ্য তিনি তাঁর যুক্তি শেষ করতে ফের আদালতে ফিরে আসেন। নেদুমপারা বলেন, তিনি বিজেপি সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও এই ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে একমত নন। তিনি বলেন, সরকারের উচিত ছিল পরীক্ষা বাতিল করা। এই যুক্তি দেওয়ার পর প্রদান বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাকে যেভাবে অপমান করা হয়েছে তার জন্য আমি আপনাকে ক্ষমা করছি লর্ডশিপ, কারণ, আপনি জানেন না আপনি কী করেছেন। আমি আপনাকে ক্ষমা করছি।”

সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে এর আগেও নেদুমপারার উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে নির্বাচনী বন্ড মামলার শুনানির সময়ও শুনানির কার্যক্রমে বাধা দিয়েছিলেন নেদুমপারা। প্রধান বিচারপতি তাঁকে সতর্ক করে বলেছিলেন, “আমার উপর চিৎকার করবেন না। এটি হাইড পার্কের কর্নার মিটিং নয়। আপনি আদালতে আছেন। আপনি আবেদন করুন, আমরা আপনার কথা শুনব। আমরা এখন আপনার আবেদনের শুনানি করছি না। আপনি যদি আবেদন করতে চান, ইমেইল করুন। এটাই এই আদালতের নিয়ম।” ২০১৯ সালে, বিচারকদের পুত্র-কন্যাদের ‘সিনিয়র অ্যাডভোকেট’ উপাধি প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছিলেন নেদুমপারা। আদালত অবমাননার দায়ে তাঁর তিন মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল। পরে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায়, আদালত নেদুমপারার সাজা স্থগিত করেছিল।