জয়পুর : ধর্ষণে সাজা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়তে হল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে। ধর্ষকদের মৃত্য়ুদণ্ডের সাজা দেওয়ার ফলে ধর্ষিতাদের খুনের ঘটনার প্রবণতা বেড়েছে। শুক্রবার এক বক্তৃতা দেওয়ার সময় কংগ্রেস নেতা একপ্রকার এই আইন ও সরকারকে দায়ী করেছেন এই ধরনের কাজের জন্য। তাঁর সেই মন্তব্য়ের একটি ভিডিয়ো টুইট করেছেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী জয়হিন্দ। সেই ভিডিয়োতেই দেশের ধর্ষকদের মৃত্য়দণ্ডের আইনের দিকে আঙুল তুলতে দেখা গিয়েছে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে।
সেই ভিডিয়োতে অশোক গেহলটকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘নির্ভয়া কাণ্ডের পর ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মেয়েদের খুনের সংখ্যা বেড়েছে। কোনও মেয়েকে যৌন নির্যাতনের পর এখন তাদের খুন করে ধর্ষক। যাতে সেখানে কোনও প্রমাণ না থাকে। গোটা দেশ জুড়ে আমি এই ঘটনা ঘটতে দেখেছি।’ তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপজ্জনক প্রবণতা।’ তাঁর এই মন্তব্যের জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকেও এই আইন নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। শুক্রবার গেহলট তাঁর মন্তব্যে ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের দিল্লির গণধর্ষণের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছিল দিল্লির এই গণধর্ষণ কাণ্ড। নির্ভয়া কাণ্ড হিসেবেই মূলত পরিচিত এই ঘটনা। ২৩ বছরের এক প্য়ারামেডিক্য়াল ছাত্রীকে দিল্লিতে ধর্ষণ করে নৃশংস অত্যাচার করা হয়। হাসপাতালে দীর্ঘ সংগ্রামের পর মৃত্য়ু হয় তাঁর। ২০২০ সালে অবশেষে এই ঘটনায় জড়িত ৪ দোষীর সাজা হয়। দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি হয় তাদের।
এদিকে গেহলটের এই মন্তব্যে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী জয়হিন্দ গেহলটের মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে জানিয়েছেন, ‘এই মন্তব্যের যতই সমালোচনা করা হোক তা কমই হবে। দেশজুড়ে এখন মেয়েদের নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয়। অনেক আন্দোলন, অনশনের পর এই আইন কার্যকর করা হয়েছে। রাজনীতিবিদদের এই ধরনের বক্তব্য সব নির্যাতিতার মনোবল ভেঙে দেয়। নেতাদের কাজ মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপ্রয়োজনীয় বক্তব্য দেওয়া নয়।’ তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ‘ধর্ষকের মতো মন্তব্য বন্ধ করা উচিত অশোক গেহলট।’ এদিকে কংগ্রেস নেতার মন্তব্য়ের সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘গত ৩ বছর ধরে ছোটো ছোটো নিষ্পাপ মেয়েদের উপর অত্য়াচারের আখড়া হয়ে গিয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা লুকোতে ও জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে এ ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করা হচ্ছে। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না।’