নয়া দিল্লি : লখিমপুর খেরির হিংসায় (Lakhimpur Kheri Violence) আটজনের মৃত্যুতে কড়া অবস্থান নিচ্ছে কেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত যা তদন্তের গতিপ্রকৃতি, তাতে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে — কাউকে রেয়াত করা হবে না। উত্তর প্রদেশ সরকারের অবস্থানও একই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির (Ajay Mishra) ছেলে আশিস মিশ্রকে (Ashish Mishra) ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে যোগীরাজ্যের পুলিশ। দল এবং প্রশাসন যে কখনও এক নয়, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও তুষ্ট নয় বিরোধীরা। আজ রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল দেখা করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে। লখিমপুরের হিংসায় ধৃত আশিস মিশ্রের বাবা অজয় মিশ্র টেনিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
৩ অক্টোবর লখিমপুরের হিংসায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন কৃষক। আর এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের নাম জড়ানোর পর থেকেই মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস। আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে আবারও সেই দাবিই তুলে ধরেন কংগ্রেস নেতারা। রাষ্ট্রপতি তাঁদের এই দাবির কথা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ব্যক্ত করবেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই আশিস মিশ্রকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট থাকছে না কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, অজয় মিশ্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় থাকলে তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। তাই কোনও বিঘ্ন ছাড়া সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য অজয় মিশ্রকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো দরকার বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেসের তরফে আরও বলা হয়েছে, এই দাবি শুধু তাদেরই নয়, যে কৃষকরা সেদিন মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের তরফেও একই দাবি তোলা হয়েছে।
আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাতের পর কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী জানিয়েছেন, “যে কৃষকরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের লোকেরাও মনে করেন, ধৃতের মন্ত্রী-বাবা নিজের পদে বহাল থাকলে, ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না। উত্তর প্রদেশ সহ গোটা দেশের সকল চিন্তাশীল মানুষের দাবি এটাই … রাষ্ট্রপতি আমাদের বলেছেন যে তিনি সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলবেন।”
রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির নেতৃত্বে লখিমপুর খেরির হিংসার ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের কড়া সাজা দেওয়া দরকার। রাহুল গান্ধী বলেন, “রাষ্ট্রপতি কোবিন্দকে বলেছি যে লখিমপুর হিংসার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। কারণ, তাঁর ছেলে অভিযুক্ত।”
কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের তরফে আজ রাষ্ট্রপতির কাছে লখিমপুরের হিংসা ঘটনায় একটি স্মারকলিপিও জমা দেন। রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ছাড়াও আজ কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলে ছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, গুলাম নবি আজ়াদ, এ কে অ্যান্টনি এবং কে সি বেনুগোপাল।