নয়া দিল্লি: সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতীয় রাজনীতিতে শতবর্ষ পেরিয়ে আসা জাতীয় কংগ্রেস (Indian National Congress)। দেশের সীমিত সংখ্যক যে কয়েকটি রাজ্য কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল পঞ্জাব তার অন্যতম। কিন্তু এবারের ভোটে সেই পঞ্জাবও কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে। কংগ্রেস পর্যদুস্ত করে আম আদমি পার্টি পঞ্জাবের ক্ষমতায় এসেছে। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের পরাজয়ের পর থেকে কংগ্রেসের অন্দরে বেশ কিছু প্রবীণ নেতা দলের বিভিন্ন নীতি এবং রণকৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। শুধু তাই নয় অনেকে আবার রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) নেতৃত্বকে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা গ্রুপ ২৩ বা জি-২৩ (G-23 Leaders) নামে পরিচিত ছিলেন। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশের পর বিক্ষুব্ধ নেতাদের মানভঞ্জনের চেষ্টাও করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। তবে সোনিয়ার সেই প্রচেষ্টা কতটা কাজে এসেছিল, সেই নিয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে সাংসদদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
আজ মঙ্গলবার দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘দল সর্বস্তরে ঐক্যবন্ধ।’ সাম্প্রতিক নির্বাচনে দলের পরাজয়কে ‘মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক’ আখ্যা দিয়েছেন। এদিন নাম না করে জি-২৩ নেতাদের উদ্দেশেও বার্তা দেন কংগ্রেস সভানেত্রী। সম্প্রতি দল পরিচালনা নিয়ে সোনিয়া গান্ধীকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রবীণ নেতারা। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলকে শক্তিশালী করা নিয়ে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে অনেকের সুপারিশ পেয়েছেন এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে তিনি কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “আমি খুব ভালভাবেই জানি, সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল প্রকাশের আপনারা হতাশায় ভুগেছেন। নির্বাচনী ফল যথেষ্ট যন্ত্রণাদায়ক এবং অপ্রত্যাশিত। আমার সংকল্প এবং চিন্তাভাবনা কঠোর প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। দলের বৃহৎ সংগঠনের সর্বস্তরের মধ্য ঐক্য রয়েছে। দলকে উন্নত অবস্থায় নিয়ে যেতে যা প্রয়োজনীয় তা করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
পাঁচ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেস যেভাবে পর্যুদস্ত হয়েছে, তাতে দল নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব যথেষ্ট চিন্তার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরেরে শেষে ও আগামী বছর একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনও খুব বেশিদিন দূরে নেই। সংগঠনকে মজবুত করে আবার নির্বাচনী ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে বড় ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন, তাই দেরি না করে সবপক্ষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইছেন সোনিয়া। আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে দলের সভাপতি ঠিক হবে, সোনিয়া চাইছেন ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি হোক, তাই বিক্ষুব্ধ নেতাদের প্রস্তাবও যে তিনি বিবেচনা করছেন, সে কথাও তিনি জানিয়ে দিলেন।