জয়পুর: ভোটের আগেই চরম অস্বস্তিতে কংগ্রেস(Congress)। ফের দ্বন্দ্ব বেধেছে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট (Ashok Gehlot) ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটের (Sachin Pilot) মধ্যে। প্রাক্তন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের অবিলম্বে তদন্ত চাই, এই দাবিতে নিজের দলের সরকারের বিরুদ্ধেই ধর্ণায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাইলট। এদিকে পাইলটের দাবিতে কান দিতে নারাজ গেহলট। দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। পঞ্জাবের মতো ভরাডুবি যাতে রাজস্থানেও না হয়, তার জন্য নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের দুই নেতার মধ্যে বিরোধ মেটাতে উদ্যোগী কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই গেহলট ও পাইলটের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীকেও খুঁজে পেয়েছে দল, এমনটাই সূত্রের খবর। এই মধ্যস্থতাকারী আর কেউ নন, মধ্য প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমল নাথ (Kamal Nath)।
মুখ্য়মন্ত্রীর গদি নিয়ে টানাটানি ও তার জেরে দলের অন্দরেই কলহ, অশোক গেহলট ও সচিন পাইলটের মধ্যে বিরোধের কথা প্রায় সকলেরই জানা। ২০১৯ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে রাজস্থানের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন সচিন পাইলট। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পুরনো মুখেই আস্থা রাখে কংগ্রেস এবং অশোক গেহলটকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয় সচিন পাইলটকে। কিন্তু দুই নেতার মধ্য়ে বিরোধ এতটাই চরমে পৌঁছয় যে মাস খানেকের মধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন সচিন। সেই সময় তাঁর দল ছাড়ার কথাও শোনা গিয়েছিল, কিন্তু শেষ অবধি রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর হাজার বোঝানো ও অনুরোধে কংগ্রেসে থেকে যান সচিন পাইলট। বারংবার তাঁর ক্ষোভ মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ অবধি কোনও পদই পাননি পাইলট। ঠিক বিধানসভা নির্বাচনের আগেই নতুন করে অশোক গেহলটের সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্রোহ যথেষ্ট চাপে ফেলেছে কংগ্রেসকে।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই নয়া দিল্লিতে সচিন পাইলটের সঙ্গে দেখা করেন কমল নাথ। দলের সাধারণ সচিব কেসি বেণুগোপালের সঙ্গেও বৈঠক হয়। দুই নেতার সঙ্গেই কথা বলে কীভাবে রাজস্থানে অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানো যায়, তা নিয়েই আলোচনা করেন কমল নাথ। দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করার পর কংগ্রেস প্রাথমিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে সমর্থন করলেও বর্তমানে সচিন পাইলটের ক্ষোভ শোনা এবং দ্রুত তা মেটানোর চেষ্টা করছে বলেই জানা গিয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দল ও মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভের কথা কমল নাথ ও কেসি বেণুগোপালকে জানিয়েছেন সচিন পাইলট। দলে যাতে তাঁকেও গেহলটের মতো সমমর্যাদা দেওয়া হয়, তার দাবিও জানিয়েছেন পাইলট। বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি কোনও দল-বিরোধী কার্যকলাপ নয়, বরং জনস্বার্থে এই দাবি করেছেন তিনি।
কংগ্রেস সূত্রে আরও খবর, কংগ্রেসের রাজস্থানের নতুন ইনচার্জ সুখজিন্দর সিং রণধাওয়া ও জয়রাম রমেশ গেহলট-পাইলট দ্বন্দ্ব নিয়ে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে, তাতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট রাহুল-প্রিয়ঙ্কা। তাঁরা চোখ বুঝে অশোকগেহলটকে সমর্থন ও সচিন পাইলটকে কার্যত একঘরে করার চেষ্টা করেছেন বলেই দাবি। গেহলট ঘনিষ্ঠ রণধাওয়াকে নিয়োগ নিয়েও দলের অন্দরেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।