লখনউ: এবার মোদী গড়ে হানা দিতে চলেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। রবিবার, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) যে বারাণসী (Varanashi) কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানেই এক বিরাট রাজনৈতিক সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রিয়াঙ্কা। বলা বাহুল্য ওই নির্বাচনী সভা থেকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi AdityaNath) ও নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করবেন রাজীব কন্যা।
কংগ্রেস (Congress) সূত্রে খবর, বারাণসীর সভা থেকে কৃষক আন্দোলন, পেট্রো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, সহ সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার সঙ্গে জড়িত একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। শতাব্দী প্রাচীন দলের নেতাদের দাবি, প্রিয়াঙ্কার এদিনের সভায় রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যায় মানুষ এখানে সমবেত হবেন।
কংগ্রেসের আরও একটি সূত্রের দাবি এদিনের সভায় বিজেপি সরকারের বেশ কিছু কাণ্ড কারখানার ‘পর্দাফাঁস’ করতে পারেন উত্তর প্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। সেই সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি লখিমপুর খেরিতে (Lakhimpur Kheri) হওয়া হত্যাকাণ্ডের পর, সেখানে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কাকে আটকায় রাজ্য পুলিশ। শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। সেই ঘটনা নিয়েও যোগী প্রশাসনকে আক্রমণে পিছপা হবেন না তিনি।
জানা গিয়েছে লখিমপুর কাণ্ড ও উত্তর প্রদেশের যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ওপর সব থেকে বেশি জোর দিতে চান কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। কংগ্রেসের মতে, বিজেপির শাসনকালে কর্মসংস্থানে অনেক পিছিয়ে পড়েছে গোবলয়ের এই রাজ্য। তারমধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় মধ্যবিত্তের। বিজেপির বিরুদ্ধে এই ইস্যু গুলিকেই কাজে লাগাতে চাইছে কংগ্রেস।
নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র হওয়ার পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে বারাণসী বরাবরই প্রাসঙ্গিক। প্রায় ৩০ বছর আগে রাজ্যের পূর্বে অবস্থিত বারাণসীতে কংগ্রেসের একচেটিয়া সমর্থন ছিল। কিন্তু ক্রমে সেই সমর্থন ফিকে হয়ে উত্থান হয়েছে বিজেপির। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই গেরুয়া গড়ে ‘হাত ‘ এর ছাপ তুলে ধরতে মরিয়া কংগ্রেস।
সম্প্রতি এক জনমত সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের শাসনভার পুনরায় বিজেপির হাতেই যেতে পারে। সমীক্ষা অনুযায়ী যোগী আদিত্যনাথ নেতৃত্বাধীন বিজেপি ৪১.৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি ৩২ শতাংশ, মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি ১৫ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
দেশের রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতেও এই রাজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই নির্বাচনের অনেক আগেই থেকেই উত্তর প্রদেশের মাটি কামড়ে পড়ে আছেন প্রিয়াঙ্কা। বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ জানিয়েছিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে তবে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই হবেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এই মন্তব্যে ধুঁকতে থাকা কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হলেও, উত্তর প্রদেশের মানুষের মন জয়ে প্রিয়াঙ্কা বা কংগ্রেস কতটা সফল তার উত্তর মিলবে আগামী বছর।
আরও পড়ুন BJP: ‘মন্ত্রীর দরবার’ চালু করছে বিজেপি, সরাসরি কথা বলার সুযোগ আম জনতার