নয়া দিল্লি: দেশের সবথেকে পুরনো রাজনৈতিক দল কগ্রেস (Congress), তাই অনেক নীতি আদর্শও রয়েছে কয়েক দশক পুরনো। এমনই এক নীতিকে ঘিরে প্রশ্ন করে দলীয় কর্মীদের অস্বস্তিতে ফেললেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। কংগ্রেসের নীতিতে মদ্যপান না করার যে নিয়ম ছিল, তার প্রসঙ্গ টেনেই মঙ্গলবারের বৈঠকে রাহুল প্রশ্ন করেন, উপস্থিত সদস্য়দের মধ্যে কারা কারা মদ্যপান করেন।
আগামী বছরই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly election 2022), তার আগে দলের সমস্ত সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিদের নিয়ে বৈঠকে বসছিলেন কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেস(Congress)-র সদর দফতরে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে এদিকে যেমন নেতাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও সংহতি না থাকার কথা উল্লেখ করে পাঠ দেন সনিয়া গান্ধী, তেমনই তাঁর ছেলে রাহুল গান্ধীও কংগ্রেসের নীতি-আদর্শ ভেঙে কারা মদ্যপান করেন, তা জানতে চাইলেন।
সনিয়ার বক্তব্য শেষের পর রাহুলকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে বলা হলে, কোনওরকম ভণিতা না করেই তিনি সরাসরি প্রশ্ন করেন, “এখানে কারা কারা মদ্যপান করেন?”। রাহুলের এই প্রশ্নে অধিকাংশ নেতাই অস্বস্তিতে পড়লেও পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সাফ বলেন, “আমার রাজ্যের অধিকাংশ মানুষই মদ্যপান করেন।”
যদিও এরপরে রাহুল আর এই বিষয়ে কথা বাড়াননি। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও ২০০৭ সালে রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের প্রাচীন রীতি-নীতির গ্রহণযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এদিন রহুলের প্রশ্ন ও সিধুর খোলামেলা উত্তর ফের একবার কংগ্রেসের প্রাচীন রীতিনীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলল।
কংগ্রেসের সাধারণ বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের নিয়মগুলিতে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। একমাত্র কার্যনীর্বাহী বা ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। মহাত্মা গান্ধী যে সময়ে কংগ্রেসের সূচনা করেছিলেন, তখন থেকেই মদ্যপানের উপর নিষেধাজ্ঞার এই নিয়মটি রয়েছে।
সূত্রের খবর, আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখে যে যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে, সেখানেও এবার এই নিয়মের সংযোজন করা হয়েছে। দলে যোগদানের জন্য যে ফর্ম তৈরি করা হয়েছে, তাতেও শর্ত রাখা হয়েছে মদ্যপান না করার। জানা গিয়েছে, ওই মেম্বারশিপ ফর্মে ১০টি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে, যা কংগ্রেসে যোগ দিতে আগ্রহীদের পূরণ করতে হবে। এরমধ্যেই একডি হল মদ্যপান বা যে কোনও ধরনের মাদক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে কর্মীদের। নতুন সদস্যরা দলের নীতি বা অনুষ্ঠানের জনসমক্ষে সমালোচনাও করতে পারবেন না।
ছাপানো ও ডিজিটাল-দুই মাধ্যমেই এই ফর্মগুলি পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা। দেশজুড়ে এই যোগদান কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, বৈঠকে রাহুল গান্ধী আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা শুরু হবে।