নয়া দিল্লি: মোদী পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। অপরাধমূলক মানহানি মামলায় (Criminal Defamation Case) তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সুরাটের দায়রা আদালত। দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় রাহুলকে। আর কারাদণ্ডের সাজার কারণেই সাংসদ পদও খোয়ান রাহুল। এখন তাঁর পরিচয় শুধু কংগ্রেস নেতা। এই সাজার উপরে স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বুধবার কংগ্রেস নেতা শীর্ষ আদালতে সাজার উপরে স্থগিতাদেশ এবং চলতি অধিবেশনে অংশ নেওয়ার আর্জি জানান। একইসঙ্গে দাবি করেন, মোদী পদবি নিয়ে মানহানির মামলায় তিনি দোষী নন।
সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় রাহুল গান্ধী উল্লেখ করেন যে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় সঠিক নয়। যদি তাঁর মনে হত যে অপরাধ করেছেন এবং তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত, তবে তিনি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিতেন। দেশের বিচার প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন রাহুল গান্ধী।
শেষ শুনানিতেই শীর্ষ আদালতের তরফে মামলাকারী পূর্ণেশ মোদী ও গুজরাট সরকারকে জবাব দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ মেনে পূর্ণেশ মোদী যে জবাবি পত্র জমা দিয়েছেন, তাতে ক্ষমা না চাওয়ার জন্য রাহুল গান্ধীকে ‘উদ্ধত’ বলেই উল্লেখ করেছেন। এই শব্দকে ‘অবমাননাকর’ বলে দাবি করেন কংগ্রেস নেতা।
এদিকে, রাহুল গান্ধী দাখিল করা হলফনামায় জানিয়েছেন, বিনা দোষেও যাতে তিনি ক্ষমা চান, তার জন্য অপরাধমূলক মামলা ও জনপ্রতিনিধি আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। লঘু দোষে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করেন রাহুল।
বিগত দিনের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছিল, এই মামলার দীর্ঘায়িত শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই। রাহুল গান্ধীর দুই বছরের কারাদণ্ডের উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে নাকি সাজা বহাল থাকবে, এবার কেবলমাত্র তার শুনানিই হবে।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে কর্নাটকের কোলারে একটি প্রচারসভা থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, “সমস্ত চোরেদের পদবি মোদী হয় কেন? তা সে নীরব মোদীই হোক বা ললিত মোদী কিংবা নরেন্দ্র মোদী…”। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই অপরাধমূলক মানহানির মামলা দায়ের করেন গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদী। গত মার্চ মাসে সুরাট আদালতের তরফে ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ও দুই বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়। এর পরেরদিনই জনপ্রতিনিধি আইনের অধীনে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়।