নয়া দিল্লি: ভোটমুখী তেলঙ্গানায় মহিলা ভোটব্যাঙ্ক কাছে টানতে একগুচ্ছ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। সেই তালিকায় রয়েছে ‘মহালক্ষ্মী’ প্রকল্পের কথাও। ভোটে জিতে সরকারে এলে তেলঙ্গানার মহিলাদের মাসে ২,৫০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। কী ব্যাপার? প্রকল্পটা চেনা চেনা লাগছে? বাংলার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সঙ্গে কি অনেকটা মিল রয়েছে এই ‘মহালক্ষ্মী’ প্রকল্পের? বাংলার রাজনীতির অন্দরমহলেও তেলঙ্গানার এই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে।
বাংলায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি মাসে রাজ্যের মহিলাদের ৫০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের মহিলাদের ক্ষেত্রে সেই অঙ্ক ১০০০ টাকা। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে স্বীকৃতি পেয়েছে। নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের গুরুত্ব বোঝেন বিরোধী নেতারাও। বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মুখেও তাই মাঝে মধ্যেই শোনা গিয়েছে, তাঁরা ক্ষমতায় এলে টাকার অঙ্ক আরও দ্বিগুণ করে দেবেন।
এমন অবস্থায় এবার ভোটমুখী তেলঙ্গানাতেও কংগ্রেসের মুখে ‘মহালক্ষ্মী’ প্রকল্পের কথা। আড়ে-বহরে যা অনেকটা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের মতো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। সামনেই তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন। চব্বিশের লোকসভার ভোটের আগে ‘ইন্ডিয়া’ জোট তথা কংগ্রেসের শক্তি পরীক্ষার এক বড় মঞ্চ হতে চলেছে এই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ‘অনুকরণে’ তেলঙ্গানায় মহালক্ষ্মী প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর ব্যাখ্যা, এই মহালক্ষ্মী প্রকল্প তৃণমূল সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের নকল একেবারেই নয়। এই প্রকল্প আগে থেকেই কর্নাটকে চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে বললেন, ‘লক্ষ্মী তো শুধু মমতার নন। লক্ষ্মী সারা ধরিত্রীর।’ তিনি আরও বলেন, ‘কংগ্রেসের দয়াতেই তৃণমূলের লক্ষ্মীলাভ হয়েছে।’ কারণ হিসেবে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘কংগ্রেস না থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ বা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না।’
যদিও এতে বিশেষ আপত্তি নেই তৃণমূল শিবিরের। পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে উৎসাহিত হয়ে যদি বাইরের রাজ্যেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো কোনও প্রকল্প চালু হয়, তাহলে তো ভালই। মহিলারা উপকৃত হচ্ছেন। বাংলার মতো বাইরের রাজ্যের মহিলারাও উপকৃত হবেন।’