নয়া দিল্লি: মোদী পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রাহুল গান্ধী। দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যার জেরে, সংসদ সদস্য হিসেবে যোগ্যতা হারিয়েছেন কংগ্রেস নেতা। সুরাটের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়কে প্রথমে জেলা আদালতে, তারপর হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন রাহুল। লাভ হয়নি। দুই কোর্টই খালি হাতে ফিরিয়েছে কংগ্রেস নেতাকে। গত শুক্রবার (৭ জুলাই), হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছে, নিম্ন আদালতের রায় ‘ন্যায্য এবং বৈধ’। তারপরও, রাহুল গান্ধীকে সাংসগ হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য বিজেপি ‘নোংরা কৌশল’ অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ করল কংগ্রেস। রবিবার (৯ জুলাই) শতাব্দী প্রাচীন দলটি ঘোষণা করেছে, এর প্রতিবাদে ১২ জুলাই প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে মহাত্মা গান্ধী মূর্তির কাছে দলের নেতা-কর্মীরা ‘মৌন সত্যাগ্রহ’ করবে।
এদিন, এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেনুগোপাল জানিয়েছেন, ১২ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে মহাত্মা গান্ধী মূর্তির কাছে ‘মৌন সত্যাগ্রহ’ আয়োজন করবে কংগ্রেসের সমস্ত রাজ্য শাখা। বেনুগোপাল বলেন, “সংসদে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সবথেকে সোচ্চার এবং সবথেকে শক্তিশালী বিরোধী নেতা ছিলেন রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়ো যাত্রার দুর্দান্ত সাফল্যের পর, লোকসভায় একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আদানি গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক ফাঁস করে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে, তাঁকে সংসদ থেকে অযোগ্য বহিষ্কার করার জন্য নোংরা কৌশল প্রয়োগ করেছে বিজেপি।”
এতে রাহুল গান্ধী মোটেই দমে যাননি বলে দাবি করেছেন বেনুগোপাল। বরং, শাসক দলের বিরুদ্ধে তাঁর সংকল্পে তিনি অটল থেকেছেন এবং ভারতের দরিদ্র, কৃষক, শ্রমিক, যুবক এবং প্রান্তিক মানুষদের সমস্যার শুনছেন। এভাবে সংসদের বাইরেও তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর এবং জনগণের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক।
বেনুগোপাল আরও বলেন, “তাঁর বিরুদ্ধে যে অন্যায় হয়েছে এবং প্রতিশোধমূলক উদ্দেশ্যে তাঁকে সাংসদ হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে শুধু কংগ্রেস নয়, সমগ্র দেশই ক্ষুব্ধ। আমরা ১৪০ কোটি ভারতীয়র কাছে আবেদন করছি, রাজনৈতিক বিশ্বাস নির্বিশেষে, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ান। গণতন্ত্রের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আমরা মনে করি, বিজেপি-আরএসএস আমাদের দল বা আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে যে কৌশলই প্রয়োগ করুক না কেন, সত্য এবং প্রত্যেক ভারতীয়ের প্রকৃত কল্যাণের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি খুব স্পষ্ট এবং তাকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। দীর্ঘ দিন এই ধরনের ফ্যাসিবাদী শক্তিকে চলতে দেবে না ভারত।”