ছবি: সংবাদ সংস্থা
নয়া দিল্লি: রাজস্থানের উদয়পুরে শুক্রবার কংগ্রেসের ৩ দিনব্যাপী চিন্তন শিবিরের উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। ১৩ থেকে ১৫ মে টানা চলবে এই শিবির। ৪০০ জনের বেশি কংগ্রেস নেতা-কর্মী এই চিন্তন শিবিরে অংশ নিয়েছেন। শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস ভারতে ক্রমাগত ‘ক্ষয়িষ্ণু’। সাম্প্রতিক পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে সনিয়া-রাহুল গান্ধীদের। এমনকী হাতে থাকা পঞ্জাবে আম আদমি পার্টির কাছে পরাজিত হতে হয়েছে। এছাড়া ২০২৪-এর প্রস্তুতি শুরু করতে গেলে এটাই শ্রেষ্ঠ সময়। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন পর কংগ্রেসের এই চিন্তন শিবির যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আগামী লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এই চিন্তন শিবির থেকে কংগ্রেস যে দলের আত্মসমীক্ষা এবং সংশোধনের পথে হাঁটবে, সনিয়া গান্ধীর বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট।
এদিন সনিয়া বলেন, ‘সময়ের দাবি মেনে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে বদল আনতে হবে। আমাদের এখন নতুনভাবে কাজ করতে হবে।’ চিন্তন শিবিরের ফাঁকে একাধিকবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অজয় মাকেন, অলকা লাম্বা, রাগিনী নায়েক, অমরিন্দর সিং রাজার মতো কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে আগামী বদলগুলির ইঙ্গিতও দেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কে কী বললেন বা ইঙ্গিত দিলেন, তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক…
- কংগ্রেসে ‘এক পরিবার, এক টিকিট’ নীতি নেওয়া হবে। একই পরিবারের অন্য কোনও সদস্য টিকিটের দাবিদার হলে তাঁকে কমপক্ষে ৫ বছর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এই নীতি চালু হলেও গান্ধী পরিবারের একাধিক সদস্যের ভোট লড়তে কোনও বাধা থাকবে না বলেই সূত্রের খবর।
- দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কংগ্রেসে অর্ধেক পদ ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য সংরক্ষণ করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে যুবসমাজ অনেক বেশি গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
- সংগঠনে কোনও নেতাই ৫ বছরের বেশি এক পদে থাকতে পারবেন না এবং ৩ বছরের কুলিং অফ পিরিয়ড থাকতে হবে। দলীয় নেতারা কেমন কাজ করছেন তা দেখে মূল্যায়নের জন্য একটি বিশেষ দল থাকবে।
- ৩ দিনের এই চিন্তন শিবিরে দেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন, বিভিন্ন রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হবে।
- ছয়টি দল গঠন করা হয়েছে, তারা সংগঠন, দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক ন্যায়বিচার, কৃষক ও যুব সমাজ সম্পর্কিত বিষয়গুলির ওপর বিশেষ নজর দেবে। প্রত্যেক দলে ৬০ থেকে ৭০ জন সদস্য থাকবেন।
- সনিয়া গান্ধী বক্তব্য রাখার সময় কংগ্রেস নেতা কর্মীদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, চিন্তন শিবিরে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করতে। মনের ভাব প্রকাশ করলে দল আরও বেশি সম্বৃদ্ধ হবে বলেই জানিয়েছেন সনিয়া।
- কেন্দ্রীয় সরকারে মোট ৪০ লক্ষ পদ খালি রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ পদ খালি থাকা সত্ত্বেও যথাযথ নিয়োগ হচ্ছে না বলেই মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব, এটাকেই প্রধান হাতিয়ার করে রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে তরুণ ও যুবকদের প্রতি বিশেষ নজর দিচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।