নয়া দিল্লি: ২০১৯ সালের শেষের দিক। চিনে (China) খোঁজ মিলল কোভিড-১৯ ভাইরাসের (COVID 19)। হাজারো কড়াকড়ির পরেও থামিয়ে রাখা যায়নি করোনাকে। একের পর এক দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভাইরাস। ঢুকে পড়ে ভারতেও। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হয় লকডাউন। প্রথম ঢেউ, দ্বিতীয় ঢেউ, তৃতীয় ঢেউ… দফায় দফায় লকডাউন। হাজার হাজার মানুষের এক লহমার কাজ হারানো। চারিদিকে মৃত্যু মিছিল। হাসপাতালে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। সেই ভয়ঙ্কর দিন কাটিয়ে ২০২২ সালে কোভিড ধাক্কা সামাল দিয়ে ওঠে ভারত।
কোভিড রয়েছে বটে, কিন্তু সেই আতঙ্ক অনেকটাই কমে এসেছে বাইশ সালের মাঝামাঝি সময়ে। কোভিডে মৃত্যুও কমেছে। এর জন্য অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হয় দেশে ব্যাপক টিকাকরণ কর্মসূচিকে। করোনা টিকার জোড়া ডোজ় এবং বুস্টার ডোজ়ের সৌজন্যে কোভিডকে অনেকটাই কাবু করা গিয়েছে। কিন্তু দুশ্চিন্তা এখনও পিছু ছাড়ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল সম্প্রতি জানিয়েছেন, “কোভিড অতিমারি মোকাবিলায় আমরা অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি এবং এখন এখন আমরা অনেক ভাল জায়গায় রয়েছি। কিন্তু প্যানডেমিক এখনও চলে যায়নি। বিশ্বে এখনও প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন।”
কোন কোন জায়গায় এখনও সমস্যা? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বিশ্বের স্বল্প-আয়ের দেশগুলিতে এখনও প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের টিকাকরণ হয়নি। স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলিতে নজরদারির প্রচণ্ড অভাব। এর ফলে ভাইরাসের নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পেতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।
ভারত কোভিড পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। দেশে প্রতিদিন গড়ে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা যাচ্ছে দেড়শোর আশপাশে। রাজ্যের ক্ষেত্রে সরকারি হিসেবে তা দশের নীচে নেমে এসেছে। কিন্তু কোভিড পুরোপুরি চলে যায়নি। নতুন করে দুশ্চিন্তা বাড়াতে শুরু করেছে ওমিক্রনের এক সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭। চিনে ইতিমধ্যেই করোনার এই উপপ্রজাতির দাপটে বহু মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বাড়তে শুরু করেছে মৃত্যু মিছিল। এদিকে চিনে যে সাব ভ্য়ারিয়েন্টের দাপট দেখা যাচ্ছে, সেই সাব ভ্যারিয়েন্ট এদেশেও পাওয়া গিয়েছে। এমন অবস্থায় হাত পা গুটিয়ে থাকতে নারাজ ভারতও। আরও নজরদারি, আরও জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের উপর জোর দিতে বলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
কলকাতা বিমানবন্দরেও ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে আসা দুই যাত্রীর শরীরে করোনার সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে একজন বেলেঘাটা আইডিকে কোয়ারান্টিনে রয়েছেন। তাঁর জিনোম সিকোয়েন্সিং করানো হবে। বিমানবন্দরগুলিতে নজরদারি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে। ২০২২-এর শেষে এসেও কাটছে না কোভিডের ভয়। করোনার দুশ্চিন্তাকে সঙ্গী করেই আরও একটি নতুন বছরে পা রাখতে চলেছে গোটা বিশ্ব।