দান্তেওয়াড়া: ফের একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে মাওবাদী উপদ্রব। ৯০-র দশকে ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলা মাওবাদী অধ্যুষিত ছিল। সেখানে পাতাটুকুও নড়তে পারত না মাওবাদী নেতাদের অনুমতি ছাড়া। দীর্ঘ প্রচেষ্টা, অভিযান, মধ্যস্থতা ও আলোচনার মাধ্যমে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছিল মাওবাদী সমস্যাকে। কিন্তু ছত্তীসগঢ়ের হামলা ফের একবার মনে করিয়ে দিল এখনও কতটা সক্রিয় মাওবাদীরা। বুধবার ছত্তীসগঢ়ের (Chhattisgarh) দান্তেওয়াড়ায় (Dantewada) পুলিশ পেট্রলিং চলাকালীনই হামলা চালায় মাওবাদীরা। আইইডি বিস্ফোরণে (IED Blast) উড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের ভ্যান (Police Van)। বিস্ফোরণে গাড়ির চালক সহ মোট ১১ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়। এই হামলার পরই প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের কনভয় ওই রাস্তায় ঢোকার আগে কেন নিয়ম মেনে পেট্রলিং করা হয়নি?
ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীরা বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যবহার করেছিল ৫০ কেজি আইইডি বিস্ফোরক। প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান, শিশুদের উৎসব ‘আমা পানদুম’-কেই হাতিয়ার বানিয়েছিল মাওবাদীরা। সাধারণত মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পুলিশের কনভয় যাওয়ার আগে ছোট একটি পুলিশের টিম নির্ধারিত রুটে পেট্রলিং করে। তবে বুধবার দান্তেওয়াড়ার ওই রুটে কোনও পেট্রলিং হয়নি কারণ ওখানে স্থানীয় একটি উৎসব চলছিল।
আরও জানা গিয়েছে, জঙ্গলের মধ্যে থেকে মাওবাদীরা যাতে হামলা চালাতে না পারে, তার জন্য কনভয় সবসময়ই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলাচল করে। কিন্তু গতকালের ‘আমা পানদুম’ অনুষ্ঠানে বহু শিশু উপস্থিত থাকায়, তারা হঠাৎ রাস্তায় চলে এলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এই ভেবেই কনভয়ের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিস্ফোরণ স্থল থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই বহু শিশু রাস্তা আটকে আম কেনার টাকা চাইছিল বলে জানা গিয়েছে। ডিস্ট্রিক রিজার্ভ গার্ডের কনভয়ের গতি ধীর হতেই আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা।
পুলিশের সন্দেহ, গোটা হামলাই পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। বিস্ফোরণস্থলের কাছেই যাতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের জোর করেছিল মাওবাদীরা। তাদের কাছে এই খবরও ছিল যে বিগত কয়েক মাস ধরে পেট্রলিং টিম বাইক ব্যবহার করছে না, বরং চার চাকার গাড়ি ব্যবহার করছে।
৫০ কেজি আইইডি বিস্ফোরক ব্য়বহার করায় নিমেষে গাড়িটি শূন্যে ২০ ফুট উচ্চতায় উড়ে যায় এবং বিস্ফোরণ স্থল থেকে ১৫০ মিটার দূরে আছড়ে পড়ে। গাড়িতে কোনও ব্য়ালেস্টিক সুরক্ষা না থাকার কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, ওই গাড়িটি ডিআরজির নিজস্ব গাড়ি নয়, ভাড়া করা গাড়ি ছিল।