নয়া দিল্লি: সামনেই নবরাত্রি, রামলীলা। সেই সময়েই মহারাষ্ট্র (Maharashtra), দিল্লি (Delhi) ও উত্তর প্রদেশে (Uttar Pradesh) হামলার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা। তবে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল(Delhi Police Special Cell)-র তৎপরতায় মঙ্গলবার বিকেলে ৬ জঙ্গি(Terrorist)-কে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে দু’জন আবার সদ্য পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লি পুলিশকে ওই ৬ অভিযুক্তকে ১৪ দিনের হেফাজতে (Police Custody) রাখার অনুমতি দেওয়া হল।
সূত্র মারফত বিগত কয়েক মাস ধরেই জঙ্গি হানার পরিকল্পনার খবর পাচ্ছিল পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। সেই সূত্র ধরেই বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ জুড়ে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। মঙ্গলবার ছয়জনের মধ্যে এক জঙ্গিকে মহারাষ্ট্র থেকে ও অপর একজনকে রাজস্থানের কোটা থেকে গ্রেফতার হয়। উত্তর প্রদেশ এটিএসের সাহায্যে সেই রাজ্য থেকে তিনজনকে গ্রেফতার হয়। বাকি দু’জন ধরা পড়ে রাজধানী দিল্লিতেই। স্পেশাল সেলের আধিকারিক নীরজ ঠাকুর এই খবর নিশ্চিত করেন।
ধৃত ৬ জঙ্গিকে জেরা করে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে দু’জন সম্প্রতি ওমানের মাসকটে পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে নৌকায় চেপে তারা পাকিস্তানে পৌঁছয়। সেখানে একটি বাগানবাড়িতে রেখে ১৫ দিন ধরে ওই দু’জন জঙ্গিকে অস্ত্র চালানোর যাবতীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কীভাবে বাকি জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, সেই শিক্ষাও দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষ হলে তারা দুবাই হয়েই ভারতে ফিরে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছে থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়েছে। আসন্ন উৎসবের মরসুমকেই তারা নিশানা করেছিল জঙ্গি হামলা চালানোর জন্য। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, রামলীলা এবং নবরাত্রির মতো অনুষ্ঠানের সময় নাশকতার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তর প্রদেশে, যেখানে এই উৎসবগুলি ধুমধাম করে পালন করা হয়, সেখানেই এই হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল।
ধৃতদের মধ্যে ইব্রাহিম নামক এক ব্যক্তি রয়েছে, যার প্রধান কাজই ছিল জঙ্গি হামলার জন্য তহবিল জোগান দেওয়া। হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা জোগাড় করা হচ্ছিল। লালা নামক অপর ধৃত আদতে একজন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী হিসাবে কাজ করত। লালাই উত্তর প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে বোমা বিস্ফোরণ করতে চেয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের বিশেষ কমিশনার অন্য একটি তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন, যা আরও পরিমাণ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ধৃতরা স্বীকার করেছে যে তাদের সঙ্গে আরও ১৪-১৫ জন সঙ্গী ছিল, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলত। তারাও একই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়েছিল। জঙ্গিরা ভারতে ঘাপটি মেরে বসে থাকলেও তাদের পরিচালনা সীমান্তের ওপার থেকেই করা হত বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তা।