বিশাখাপত্তনম: ফের শ্রদ্ধা কাণ্ডের (Shraddha Walkar Murder Case) ছায়া দেশেরই এক রাজ্যে। এক মহিলাকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে। তারপর তা একটি প্লাস্টিকের ড্রামে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার অর্থাৎ গতকাল পুলিশ পচা-গলা কিছু দেহের টুকরো উদ্ধার করেছে। কাল দেহাংশ উদ্ধার হলেও পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে প্রায় ১৮ মাস আগেই এই খুন করা হয়েছে। অনেকটা শ্রদ্ধা ওয়াকারের খুনের ঘটনার আদলেই।
সোমবার বিশাখাপত্তনমের মধুরাওয়াড়া শহরের ভিকালানগুলা কলোনির একটি বাড়িতে প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে এক মহিলার দেহের পচা গলা টুকরো উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মহিলার পরিচয় জানা না গেলেও পুলিশের অনুমান, মৃতের বয়স ৩৫ বছরের কাছাকাছি এবং উচ্চতা ৪.৫ ফুটের মতোই হবে। এই মহিলা একজন যৌনকর্মী হতে পারেন বলে মনে করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে ২০২১ সালে মহিলাকে খুন করা হয়েছে। তবে তার ১৮ মাস পর গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
মহিলার পরিচয় ও খুনের কারণ এখনও পুলিশের অজানা। তবে এই খুনের কিনারা করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ১৮ মাস আগে মহিলাকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছিল। তারপর একটি প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে শক্ত করে তার উপর টেপ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে নেমে কিছু সূত্র এসেছে পুলিশের হাতে। ৩৩ বছর বয়সী ঋষি এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। মধুরাওয়াড়াতে একটি ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে কাজ করেন ঋষি। তাঁকে ইতিমধ্যেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
মধুরাওয়াড়াতেই একটি বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন ঋষি। পুলিশ জানিয়েছে, অটোতে কখনও শেয়ারে যাওয়ার সময় ঋষি আর ওই মহিলার পরিচয় হয়েছিল। এরপর স্ত্রী একদিন বাপের বাড়ি যাওয়ায় ভাড়া বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে সেই মহিলাকে ঘরে নিয়ে যান ঋষি। পুলিশের অনুমান, সেই রাতেই তাঁদের মধ্যে কোনও কারণে বচসা বাঁধে। তারপর কাপড়ের ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে ওই মহিলাকে খুন করা হয়। তার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে চলে যায়। তারপর তিনি শহরে ছেড়ে চলে যান। বাড়িওয়ালাকে জানিয়ে যান, তিনি স্ত্রীয়ের খেয়াল রাখতে সিতামপেটা যাচ্ছেন। কিন্তু ২০২১ সালের মে মাসের পর তিনি আর ফেরেননি। ঋষির বাড়িওয়ালা রমেশ পুলিশকে জানিয়েছেন, বাড়ি ভাড়ার জন্য ঋষিকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন রমেশ। কিন্তু কোনওভাবেই যোগযোগ করতে না পেরে নিজেই ওই ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। তখনি সেই প্লাস্টিকের ড্রাম নজরে আসে রমেশের। আর খুলতেই মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় হয় রমেশবাবুর। ভিতরে মেলে মহিলার চুল ও টুকরো টুকরো দেহ। আপাতত সেই দেহাংশগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।