নয়া দিল্লি : দিল্লি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব আজ বিকেলে দেখা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে। উল্লেখ্য, আজ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কয়েক ঘণ্টা পরেও চলতে থাকে জাহাঙ্গিরপুরীর উচ্ছেদ অভিযান। যা নিয়ে চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সদর দফতরে গিয়ে নেতারা বৈঠক করেন শাহের সঙ্গে। বিজেপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দিল্লিতে দলের সভাপতি আদেশ গুপ্তা, সাংসদ রমেশ বিধুরি, বিধায়ক রাম বীর বিধুরি এবং নেতা মনিন্দর সিং সিরসা। তবে বৈঠকে ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি নেতারা। দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এটি একটি ‘রুটিন’ বৈঠক ছিল।
এর আগে দিল্লি বিজেপির সভাপতি একটি চিঠি লিখে উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র রাজা ইকবাল সিংয়ের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন যাতে জাহাঙ্গিরপুরীতে ‘বেআইনিভাবে দখল’ করা জায়গা থেকে দোকান, বাড়ি উচ্ছেদ করা হয়। এরপরই আজকে এই উচ্ছেদ অভিযানে নামে উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। বিশাল পুলিশ বাহিনী সেই সময় জাহাঙ্গিরপুরীতে মোতায়েন করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, হনুমান জয়ন্তীর দিন এই জাহাঙ্গিরপুরীতেই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছিল। তারপর থেকে সেই সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। স্বভাবতই এহেন সংঘর্ষের পর গত বেশ কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি ছিল। সেই আবহে আজকের এই উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে উত্তেজনা ছিল এলাকায়। এরই মাঝে সুপ্রিম কোর্ট আজকে এই উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশিকা জারির পরেও বেশ কয়েক ঘণ্টা উচ্ছেদ অভিযান জারি ছিল।
এর আগে উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেখানে যেখানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে, সেখানেই সরকারের তরফে বুলডোজার চালিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এই ধরনের উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করেই এই উচ্ছেদ অভিযানগুলি চালানো হচ্ছে। দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীর মামলাটি সেই মামলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও আজ কেন জাহাঙ্গিরপুরীতে ২০টি দোকান ভেঙে দেওয়া হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তাই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে অমিত শাহের বৈঠক বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।