নয়া দিল্লি: ইজরায়েল দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণ। আকারে ছোট হলেও সেই বিস্ফোরণে আন্তর্জাতিক যোগ পাওয়া যাচ্ছে প্রাথমিক তদন্তে। প্যাকেটে মুড়ে রাখা বিস্ফোরকের পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে হুমকি চিঠি। যাতে লেখা ‘এটা তো সবে ট্রেলর’! আর সেই বিস্ফোরণের তদন্ত করতে গিয়েই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ঠিক কীভাবে ওই বিস্ফোরণ ঘটল তা জানতে যৌথভাবে তদন্ত করছে ভারত ও ইজরায়েল। তবে সম্প্রতি যে তথ্য তদন্তে উঠে এসেছে, তা দেখে রীতিমতো চমকে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণ স্থল ঘুরে দেখেছে ফরেনসিক টিম। বিস্ফোরণ স্থল ও বোমা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে PETN নামে এক বিশেষ ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে ওইদিন।
আরও পড়ুন: ‘আমরাও জানি কীভাবে ভোট করাতে হয়…’, বিজেপিতে যোগ দিয়েই সুর চড়ালেন রাজীব
Pentaerythritol tetranitrate বা PETN নামে ওই বিস্ফোরক মোটেই খুব একটা সহজলভ্য নয়। সাধারণত জঙ্গি সংগঠনগুলো এই উপাদান ব্যবহার করে বোমা তৈরি করে। আল-কায়েদা এই PETN বিস্ফোরক ব্যবহার বলে জান গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, ট্রানজিস্টার রেডিয়োতে ব্যবহারের জন্য ৯ ভোল্টের ব্যাটারির কিছুটা অংশও এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। অতীতে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তইবা বোমা বানাতে এই ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করেছে, এমন তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
আরও পড়ুন: ভাল আছেন সৌরভ, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন আজ
প্রজাতন্ত্র দিবসের পর শুক্রবার বিটিং রিট্রিট উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকেরা গত শুক্রবার বিজয় চকেই ছিলেন। তার মধ্যেই বিকেল ৫টা ৫ নাগাদ এই বিস্ফোরণ ঘটে।
দিল্লির উচ্চ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই পড়ে এই দূতাবাস। বিস্ফোরণের পরই এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে। সেখানে একটি ক্যাব দেখা গিয়েছে। ক্যাবটি দু’জনকে ঘটনাস্থলে নামিয়ে চলে যায়। এরপরই ওই দুই ব্যক্তিকে হেঁটে বিস্ফোরণস্থলের দিকে যেতেও দেখা যায়। কারা ওই ব্যক্তি তা জানার চেষ্টা করছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল। সন্দেহভাজনদের একটি স্কেচও তৈরি করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে থেকে পাওয়া চিঠিতে ইরানের পরমাণু গবেষক মোহসেন ফাকরিজাদে ও ইরানের জেনারেল কর্তা কাশিম সোলেমানির নাম উল্লেখ থাকাতেই বিস্ফোরণে ইরান যোগের সন্দেহ আরও তীব্র হয়েছে। গতবছর মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলেমানি প্রাণ হারিয়েছিলেন। ইরান এই মৃত্যুর বদলা নিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছিল। তাই বিস্ফোরকের ধরনই বলে দিচ্ছে একেবারে আন্তর্জাতিক কায়দায় এই হামলার চেষ্টা হয়েছে।