Delhi Yellow Alert: করোনা-ওমিক্রনের জোড়া হামলা রাজধানীতে, ‘হলুদ’ গেরোয় নাকাল অফিস যাত্রীরা!
Delhi Commuters Face Problem due to Yellow Alert: বুধবার সকাল থেকেই দিল্লির বিভিন্ন মেট্রো স্টেশন(Metro Station)-র বাইরে যাত্রীদের লম্বা লাইন দেখা যায়। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ধৈর্য হারাতে দেখা যায় অফিস যাত্রীদের। তাদের দাবি, আচমকাই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে মেট্রো চলাচলের ঘোষণা করায়, সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
নয়া দিল্লি: করোনা (COVID-19) ও ওমিক্রন(Omicron)-র জোড়া ধাক্কায় বিপর্যস্ত রাজধানী দিল্লি(Delhi)। মঙ্গলবার থেকেই জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert)। বন্ধ হয়েছে স্কুল, কলেজ, সিনেমা হল ও জিম। মেট্রো, বাস সহ গণপরিবহনেও যাত্রী সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই দেখা গেল সেই বিধিনিষেধের প্রভাব। স্কুল পড়ুয়াদের ভিড় দেখা না গেলেও, বাস-মেট্রো স্টেশনগুলিতে দেখা গেল যাত্রীদের লম্বা লাইন।
দেশে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণের একটি বড় অংশই দিল্লির বাসিন্দা। দেশে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১, এরমধ্যে দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৮। উর্ধ্বমুখী সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই গতকাল থেকে রাজ্যে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ওঠানামার উপর নির্ভর করে সতর্কতা, এমনকি লকডাউন (Lockdown) জারি করা হতে পারে বলেই জানানো হয়েছে।
কী কী বিধিনিষেধ জারি হয়েছে?
দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের (Delhi Disaster Management Authority) নির্দেশিকা অনুযায়ী, আপাতত দিল্লিতে সমস্ত অফিসে ৫০ শতাংশ হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিনেমা হল, জিম। মলের বিভিন্ন দোকান ও সাধারণ দোকান খোলা হবে জোড়-বিজোড় হিসেবে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা অবধি জারি থাকবে নৈশ কার্ফু। দোকানগুলির সময়সীমাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, সকাল ১০টায় দোকান খোলা ও রাত ৮টার মধ্যে তা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে প্রাক্টিকাল পরীক্ষা, প্রজেক্ট ও অ্যাসাইনমেন্ট অনলাইনেই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাত্রীদের ভোগান্তি:
বুধবার সকাল থেকেই দিল্লির বিভিন্ন মেট্রো স্টেশন(Metro Station)-র বাইরে যাত্রীদের লম্বা লাইন দেখা যায়। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ধৈর্য হারাতে দেখা যায় অফিস যাত্রীদের। তাদের দাবি, আচমকাই ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে মেট্রো চলাচলের ঘোষণা করায়, সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সংস্থা থেকেই এখনও বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ না দেওয়ায়, তাদের অফিস যেতে হচ্ছে। এদিকে, যাতায়াতের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকায়, বাধ্য হয়েই মেট্রোর লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।
বালাই নেই সামাজিক দূরত্বের:
করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজন সামাজিক দূরত্বের (Social Distancing)। সে কথা মাথায় রেখেই মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ মেট্রো স্টেশনের বাইরে সামাজিক দূরত্বের লেশ মাত্র দেখা যাচ্ছে না। সেখানে কার্যত একে অপরের ঘাড়ের উপর উঠেই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন যাত্রীরা। একই চিত্র বাস স্ট্যান্ডগুলিতেও। সেখানেও রাস্তার ধারে যাত্রীদের বসে থাকতে দেখা যায়। কয়েকজন ক্ষোভ উগরে বলেন, “এভাবে আংশিক পরিষেবা বন্ধ না করে, পুরোপুরি বাস-মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়াই শ্রেয়। তাহলে যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তিও কমবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা:
রাজ্যে দ্রুতগতিতে ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই গতকাল উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল (Arvind Kejriwal)। বৈঠক শেষ হওয়ার পরই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংক্রমণের হার ও হাসপাতালে বেডের সংখ্যার উপর নির্ভর করেই ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ কঠোর বা শিথিল করা হবে। এটিকে গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান বলা হচ্ছে।
দিল্লিবাসীকে এখনই উদ্বিগ্ন হতে বারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আক্রান্তদের অধিকাংশই উপসর্গহীন, তাই চিন্তার কারণ নেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি সকলকেই মেনে চলতে হবে। বাজারে অনেকেই মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন, আপনারা যদি মাস্ক না পরেন, তবে বাজার বন্ধের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”