নয়া দিল্লি: ২৩ বছর আগের এক মানহানির মামলায়, সোমবার (১ জুলাই), পাঁচ মাসের কারাদণ্ড হল সমাজকর্মী মেধা পাটকরের। ২০০১ সালে এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন বিনয় কুমার সাক্সেনা। যিনি বর্তমানে দিল্লির উপ-রাজ্যপালের পদে আছেন। এদিন দিল্লির সাকেত আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাঘব শর্মা জানান, মেধা পাটকরের বয়স এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে এক বছর বা দুই বছরের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। রাপাদণ্ডের পাশাপাশি তাঁকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দিতে হবে বিনয় সাক্সেনাকে। তবে, সাকেত আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাঘব শর্মা আরও জানিয়েছেন, কারাদণ্ডের আদেশটি ৩০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। গত ২৪ মে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল মেধা পাটকরকে।
২০০০ সালে, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সিভিল লিবার্টিজ’ নামে এক সংগঠনের সভাপতি পদে ছিলেন দিল্লির বর্তমান উপরাজ্যপাল বিনয় সাক্সেনা। মেধা পাটকরের ‘নর্মদা বাঁচাও’ আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। নর্মদা নদীর উপর বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন শুরু করেছিলেন মেধা পাটকর। বিনয় সাক্সেনা ওই বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করার পর, তাঁর বিরুদ্ধে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন মেধা পাটকর। সেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতেই ২০০১ সালে, আহমেদাবাদের এক আদালতে, মেধা পাটকরের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন বিনয় সাক্সেনা। ২০০৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলাটি দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
বিনয় সাক্সেনার বিরুদ্ধে মেধা পাটকর অভিযোগ করেছিলেন, তিনি গুজরাট সরকারের দালাল। বিল গেটস এবং উলফেনসনের কাছে গুজরাটের জনগণ এবং তাদের সম্পদ বন্ধক রেখেছেন তিনি। তাদের থেকে হাওয়ালা মারফৎ টাকা পেয়েছেন বিনয় সাক্সেনা, এমনও বলেছিলেন মেধা। ২৪ মে এই মানহানি মামলায় মেধা পাটকরকে দোষী সাব্যস্ত করার সময় বিচারক বলেছিলেন, মেধা পাটকর ইচ্ছাকৃতভাবেই এবং অঙ্ক কষেই ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। এর মাধ্যমে বিনয় সাক্সেনার মানহানি করার স্পষ্ট উদ্দেশ্য ছিল তাঁর। বিচারক আরও বলেছিলেন, বিনয় সাক্সেনাকে অবৈধ এবং অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত বলায়, তাঁর খ্যাতি এবং মানের বড় ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে, মেধা পাটকরের কাছে এই সকল অভিযোগের কোনও সারগর্ভ প্রমাণ নেই। বিনয় সাক্সেনার বিরুদ্ধে করা মেধা পাটকরের অভিযোগগুলির পিছনে, জনগণের ক্ষোভ উস্কে দেওয়ার উদ্দেশ্যেও ছিল বলে জানিয়েছিল আদালত।
#WATCH | Delhi: Narmada Bachao Andolan activist Medha Patkar says, “The truth can never be defeated…We have not tried to defame anyone, we only do our work…We will challenge the court’s judgement…” https://t.co/8KDuq5ufK8 pic.twitter.com/hDelxBLe4G
— ANI (@ANI) July 1, 2024
এই রায় ঘোষণার পর, মেধা পাটকর বলেছেন, “সত্যকে কখনই পরাজিত করা যায় না। আমরা কারও মানহানি করার চেষ্টা করিনি, আমরা শুধু আমাদের কাজ করেছি। আমরা আদালতের এই রায়কে (উচ্চ আদালতে) চ্যালেঞ্জ করব।