দিল্লিতে রোজ আক্রান্ত হতে পারেন ৪৫ হাজার! করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাস আইআইটি-র

ঋদ্ধীশ দত্ত |

May 29, 2021 | 9:33 PM

প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এর পাশাপাশি এই একই সময়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে ৯০০০ রোগীকে

দিল্লিতে রোজ আক্রান্ত হতে পারেন ৪৫ হাজার! করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাস আইআইটি-র
ছবি- টুইটার

Follow Us

জ্যোতির্ময় রায়: বহু কষ্টে নয়া দিল্লির করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্রমশ স্বাভাবিক হওয়ার পথে এগোচ্ছে রাজধানী। এরই মধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বেগজনক পূর্বাভাস দিল আইআইটি দিল্লি। যা মারাত্মক দুশ্চিন্তায় ফেলেছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে।

সম্প্রতি আইআইটি দিল্লির একটি গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তা ভয়াবহ বললেও কম বলা হবে। এই গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রাজধানীতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। এর পাশাপাশি এই একই সময়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে ৯০০০ রোগীকে। এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে দিল্লি আইআইটি-র গবেষণা।

আইআইটি-র ‘রিভিউ অ্যান্ড রেকমেন্ডেসন ফর ম্যানেজমেন্ট অফ অক্সিজেন ডিউরিং কোভিড ক্রাইসিস’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটিতে তিন ধরনের সম্ভবনাময় পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম অবস্থায় তৈরি হতে পারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো পরিস্থিতি। যেখানে রোগীর সংখ্যা, হাসপাতালে ভর্তি ব্যক্তিদের সংখ্যা এবং অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা গত কয়েক সপ্তাহ আগের মতো হবে।

দ্বিতীয় পরিস্থিতি নিয়ে অনুমান, নতুন রোগীদের সংখ্যা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। এবং তৃতীয় পরিস্থিতি তৈরি হবে যদি সংক্রমণ মোট জনসংখ্যার অনুপাতের হারে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সংক্রমণ এই পর্যায়ে পৌঁছলে প্রতিদিন ৪৫ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত এবং ৯০০০ রোগীর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে।

দিল্লি হাইকোর্টে নথিভুক্ত করা একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে প্রতিদিন ৯৪৪ মেট্রিক টন অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে। এই বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি বিপিন সংঘী এবং বিচারপতি জসমিত সিংয়ের একটি বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি সরকারের জবাব তলব করেছে। আইআইটি দিল্লির দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে সেই তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরতে হবে রাজ্য সরকারকে।

আরও পড়ুন: কোভিডে বাবা-মা হারা শিশুদের ১০ লক্ষ টাকা দেবে কেন্দ্র, একগুচ্ছ মানবিক সিদ্ধান্ত মোদীর

বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণে আদালত জানিয়েছে, শতাব্দীতে একবার আসা এমন একটি মহামারি নিয়ে আমরা বর্তমানে কাজ করছি। ইতিহাস বলছে, এর আগে সর্বশেষ মহামারি ১৯২০ সালে হয়েছিল (স্প্যানিশ ফ্লু)। তাই এর বিরুদ্ধে মোকাবিলায় প্রাধান্য দেওয়া উচিত এবং অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করে আমরা দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারি।

দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন আইআইটি দিল্লির অধ্যাপক সঞ্জয় ধীর আদালতকে জানান, কেজরীবাল সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি দিল্লিতে অক্সিজেনের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য রাজ্যের সামনে বেশ কয়েকটি টাস্ক রেখেছেন। সঞ্জয়ের মতে, আরও বিপজ্জনক হতে চলা তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে স্টোরেজ সক্ষমতার বৃদ্ধি, দিল্লির বাইরে থেকে সরবরাহের উন্নতি, অক্সিজেন (পিএসএ) প্লান্ট এবং ক্রায়োজেনিক অক্সিজেন ট্যাঙ্কারগুলির ঘাটতি মোকবিলায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

আইআইটি-র প্রতিবেদনে রাজধানীতে অক্সিজেনের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। দিল্লি সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ২০-১০০ টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ২০-২৫ টি ক্রাইওজেনিক অক্সিজেন ট্যাঙ্কার কেনার জন্য। মহামারিকালে এই ট্যাঙ্কগুলি অক্সিজেন সরবহারে সাহায্য করবে। প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে যে, অক্সিজেন ট্যাঙ্কারের আকার সম্পর্কে দিল্লি সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। অক্সিজেন ট্যাঙ্কারের আকার এমন হওয়া উচিত যেন পরিবহনের সময় তা কোথাও বাধাপ্রাপ্ত না হয়।

আরও পড়ুন: সংক্রমণের হার কমলেও কিছুতেই স্বস্তি দিচ্ছে না মৃত্যু, একদিনে ১৪৮ জন মারা গেলেন রাজ্যে

Next Article