নয়া দিল্লি: একজন বিশ্বখ্যাত। ছত্রিশ বছর পর দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। আরেকজন তাঁকেই আদর্শ বলে মেনেছিল। কিন্তু, তারপরই হয়েছিল পথভ্রষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালানোর পর, অবশেষে ধরা পড়ল ‘মেসি গ্যাং’। বৃহস্পতিবার, নয়া দিল্লিতে ৪৩ বছরের পিঙ্কু মেসি এবং তাঁর গ্যাং-এর আরও তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর ফলে দক্ষিণ দিল্লির সিআর পার্ক, ডিফেন্স কলোনি এবং হাউজ খাস এলাকায় অন্তত ৫৫টি মামলার সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। গ্যাং সদস্যদের কাছ থেকে মোট ৫৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘মেসি গ্যাং’ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পকেটমারীর সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ জানিয়েছে, একসময় গ্যাং-এর নেতা পিঙ্কু মেসির অনুপ্রেরণা ছিলেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার লিওনেল মেসি। জসোলার এই বাসিন্দা ভাল ফুটবল খেলত। এই থেকেই তাঁর গ্যাং-এর নাম হয়েছে মেসি গ্যাং। বাকি অভিযুক্তরা হল, বদরপুরের বাসিন্দা অজয় কুমার, হরিয়ানার ফরিদাবাদের বাসিন্দা পাম্মি ওরফে অজয়, টাইগরি এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ খান। পিঙ্কু মেসির নামে আগেই হত্যা ও অস্ত্র আইনে আরও ১০টি মামলা ছিল।
দক্ষিণ দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার চন্দন চৌধুরী জানিয়েছেন, গত ২০ ডিসেম্বর সিআর পার্ক থানার স্টেশন হাউস অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ একটি দল ওই এলাকায় টহল দিচ্ছিল। একটি সন্দেহজনক অটোরিকশা নজরে এসেছিল তাঁদের। ওই অটোয় চারজন লোক বসে ছিল। পুলিশ কর্মীরা তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওই এলাকায় তারা কী করছে। প্রাথমিকভাবে তারা পুলিশের দলটিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের তল্লাশি করতেই তাদের কাছ থেকে মোট ১১টি মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ জানতে চেয়েছিল, অতগুলি মোবাইল ফোন নিয়ে তারা কী করছে। কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি তারা। এরপর পুলিশের চাপের মুখে তারা স্বীকার করে যে, ১১টি মোবাইল ফোনই চুরি করেছে তারা।
পরে অজয়, পাম্মি, ফিরোজ এবং পিংকু মেসির পরিচয় জানা যায়। তাদের জেরা করে চুরি যাওয়া আরও ৪৫টি অত্যন্ত দামী মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এরপরই ওই চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ৫৬টি মোবাইল ফোন এবং অটোরিকশাটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। জেরার মুখে মেসি গ্যাং-এর চার সদস্য জানিয়েছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় গত ৪-৫ বছর ধরেই তারা চুরি করছিল। জনাকীর্ণ এলাকায় কোনও ব্যক্তিকে তারা নিশানা করত। এরপর তাকে আচমকা ঘিরে ধরে তাদের মনযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিত। এই ফাঁকে তাদের মোবাইল ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে অটোরিকশায় করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেত।