‘সরকার ফেলতেই দিল্লিতে দাঙ্গা’, উমর খালিদের জামিনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে দিল্লি পুলিশ
2020 Delhi Riot: হলফনামায় দিল্লি পুলিশ আরও উল্লেখ করেছে যে ঠিক সেই সময়ই দাঙ্গা-অশান্তি শুরু হয়েছিল, যখন প্রথমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত সফরে আসছিলেন। এই গোটা পরিকল্পনাই করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং বিশ্বের কাছে ভারতের খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি করতে।

নয়া দিল্লি: দিল্লি দাঙ্গা দিয়ে চাঞ্চল্য়কর দাবি। দিল্লি পুলিশ দাবি করল, ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গা (Delhi Riot) আসলে এক ষড়যন্ত্র ছিল। ওই দাঙ্গা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ছিল না, বরং পরিকল্পিতভাবে সরকার বদলের অভিযান ছিল। সুপ্রিম কোর্টে এই হলফনামাই জমা দিতে চলেছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। উমর খালিদ, শারজিল ইমাম, মিরন হায়দার, গুলফিসা ফতিমা সহ দিল্লি দাঙ্গায় অভিযুক্তদের জামিনের বিরোধিতা করতে চলেছে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হলফনামায় বলা হয়েছে, ২০২০ সালের দাঙ্গা, যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, তা কোনও স্বতঃফূর্ত আন্দোলন বা জনতার ক্ষোভ ছিল না। এটা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল দেশের শান্তি বিঘ্নিত করা এবং বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতিই দিল্লি হাইকোর্ট উমর খলিদ ও অন্যান্যদের জামিন দিতে অস্বীকার করে। ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (UAPA) মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
পুলিশ হলফনামায় জানিয়েছে, তারা প্রতক্ষ্যদর্শী ও সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করেছে, প্রয়োজনীয় নথি ও টেকনিক্যাল প্রমাণ সংগ্রহ করেছে যা সাম্প্রদায়িক গভীর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগসূত্র স্থাপন করেছে। পুলিশের দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে ওই অশান্তি-দাঙ্গা পরিকল্পনামাফিকই তৈরি করা হয়েছিল দেশের ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের উপরে আঘাত হানতে।
সূত্রের খবর, হলফনামায় দিল্লি পুলিশ আরও উল্লেখ করেছে যে ঠিক সেই সময়ই দাঙ্গা-অশান্তি শুরু হয়েছিল, যখন প্রথমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত সফরে আসছিলেন। এই গোটা পরিকল্পনাই করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং বিশ্বের কাছে ভারতের খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি করতে। সেই কারণেই অত্যন্ত সুচারুভাবে সিএএ ইস্যু বেছে নেওয়া হয়েছিল। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে উগ্রবাদকেই উৎসাহ দেওয়ার ছক ছিল।
উমর খলিদ, শারজিল ইমাম, মিরান হায়দর, গুলফিসা ফতিমা সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরি করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা তদন্তে অসহযোগিতা করেছে বলেই অভিযোগ পুলিশের।
হলফনামা অনুযায়ী, অভিযুক্তরা নিম্ন আদালতকে চার্জ গঠনে বাধা দেওয়ার ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল। তদন্তে এত দেরি হওয়ার পিছনেও অভিযুক্তদের হাত রয়েছে, তদন্তকারী সংস্থার নয়। এই ধরনের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত কার্যকলাপের ক্ষেত্রে ‘জেল, নো বেল’ অর্থাৎ জামিন না দিয়ে জেলে রাখাই নিয়ম হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেছে দিল্লি পুলিশ। হলফনামায় আরও বলা হয়েছে যে অভিযুক্তরা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরাধ এতটাই গুরুতর যে শুধুমাত্র বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ার কারণে তাদের ছেড়ে দেওয়া যায় না।
যদি অভিযুক্তরা সহযোগিতা করে, তাহলো ১০০-১৫০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ ও বিচার করা সম্ভব। পুলিশের সংগ্রহ করা প্রমাণে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে চ্যাট তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রমাণের সাপেক্ষেই বলা হয়েছে যে এই দাঙ্গা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বিশ্বের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল যে সিএএ-তে পরিকল্পনা করে মুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। শুধু দিল্লিতেই ৭৫০টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল।
