নয়া দিল্লি: যোগীরাজ্যের পর এ বার রাজধানীতেও হানা দিল স্ক্রাব টাইফাস(Scrub Typhus)। ইতিমধ্যেই দিল্লি(Delhi)-র দুটি হাসপাতালে একাধিক শিশুকে ভর্তি করতে হয়েছে এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জেরে।
আচমকাই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে অজানা জ্বর ও নানা সংক্রমণ। অসুস্থ হয়ে পড়ছে অধিকাংশ শিশুই। সম্প্রতিই উত্তর প্রদেশে (Uttar Pradesh) ভয়াবহ আকার ধারণ করে অজানা জ্বর, ১০ দিনেই প্রায় ৪৫টি শিশুর মৃত্যু হয়। পরে কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে জানা যায়, মূলত ডেঙ্গু(Dengue)-র প্রভাবেই শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তবে নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গুর পাশাপাশি স্ক্রাব টাইফাস(Scrub Typhus)-রও খোঁজ মেলে। এ বার দিল্লির শিশুদের শরীরেও এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নজরে এল।
আপাতত চাচা নেহেরু বাল চিকিৎসালয় ও দ্বারকার আকাশ হেলথকেয়ারে শিশুদের স্ক্রাব টাইফাসের চিকিৎসা করা হচ্ছে। নেহেরু হাসপাতালের এক বরিষ্ঠ চিকিৎসক জানান, আক্রান্তদের মধ্য়ে ৯০ শতাংশই শিশু। আপাতত মুখে খাওয়ার ওষুধগুলি দিয়েি চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। অন্য়দিকে, আকাশ হেলথকেয়ারের পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রধান ডঃ মীনা জে জানান, মূলত ছয় বছর বা তার কম বয়সী শিশুরাই চিকিৎসা করাতে আসছে।
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকলেই রক্ত পরীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে অধিকাংশের নমুনাতেই স্ক্রাব টাইফাসের উপস্থিতি জানা যাচ্ছে। এখনও অবধি সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ না করায় অল্প ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা চালানো হচ্ছে এবং সুস্থ হয়ে গেলে দু-তিনদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
গুরুগ্রামের পরশ হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ মনীশ মান্নান জানান, ডেঙ্গুর উপসর্গের সঙ্গে স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গের মিল থাকায় অনেকেই ভুল চিকিৎসার শিকার হন, তাই রোগ নির্ণয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত। তিনি বলেন, “বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে থাকা পোকামাকড় থেকেই এই রোগ ছড়ায়। যদি কয়েকদিনের মধ্যে জ্বর কমানো বা নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে মৃত্য়ু পর্যন্ত হতে পারে। স্ক্রাইৃব টাইফাস সংক্রমণে ৫০ শতাংশ অবধি মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।”
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পোকা কামড়ানোর ৭ থেকে ১০ দিন পর থেকে উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। প্রথমে জ্বর এবং পরে মাথা ব্য়াথা, গা-হাত-পা ব্যাথা, পেটে ব্যাথা ও বমি শুরু হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, জ্ঞান হারানো, প্রচন্ড কাশি, এমনকি কাউকে চিনতে পারায় সমস্যাও হতে পারে।
মূলত স্ক্রাব টাইফাস হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ, মস্তিষ্ক ও কিডনির ক্ষতি করে, সেই কারণেই এই ধরনের উপসর্গগুলি দেখা যায়। এখনও অবধি স্ক্রাব টাইফাসের কোনও ভ্যাকসিন উৎপাদন হয়নি। তবে সাধারণ কিছু ওষুধ দিতে চিকিৎসা চালানো হয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সংক্রমণ এড়াতে বাচ্চাদের ঝোপঝাড় জাতীয় এলাকায় যাওয়া উচিত নয় এবং বাইরে বের হলে যেন হাত-পা ঢাকা পোশাক পরেই বের হয় তারা।
আরও পড়ুন: Bharat Bandh: ফের ভারত বনধের ডাক সংযুক্ত কিসান মোর্চার, ঠিক করে দেওয়া হল আন্দোলনের নিয়মবিধিও