নয়া দিল্লি: কিছুতেই দূষণের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছে না রাজধানী। শীতের শুরুতে সাধারণত দূষণ বাড়লেও, একাধিক বিধি নিষেধের কারণে দিল্লি(Delhi)-তে কমেছিল দূষণের মাত্রা (Air Pollution)। সেই কারণেই খুলে দেওয়া হয়েছিল স্কুলগুলি, ধীরে ধীরে শিথিল করা হয়েছে বাকি নিয়মও। কিন্তু বছর শেষে উৎসব উদযাপনের জেরে ফের একবার “বিপজ্জনক” (Severe) পর্যায়ে পৌছল দিল্লির বাতাস।
বায়ুর গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সফর(SAFAR)-র তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির বাতাসের গুণমান ফের বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এদিন সকাল ৭টায় দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ছিল ৪৩০। অত্যাধিক যান চলাচল, বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান, বড়দিন উপলক্ষ্যে বাজি পোড়ানোর কারণেই ফের একবার দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বায়ু মান সূচকের মান শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে “ভাল” পর্যায়ে রাখা হয়, যা শ্বাস নেওয়ার পক্ষে ভাল। ৫১-১০০ হলে তা “মাঝারি” পর্যায়ে রাখা হয়। ১০১-১৫০ হলে তা খারাপ হিসাবেই গণ্য করা হয়। যাঁদের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের পক্ষে এই বাতাস অস্বাস্থ্যকর বলেই গণ্য করা হয়। বায়ু মান সূচক ১৫১-২০০ হলে তাকে “অস্বাস্থ্যকর” বা “খারাপ” পর্যায়ে রাখা হয়, যা সকলের পক্ষেই অস্বাস্থ্যকর। সূচক ২০১-৩০০ হলে, তাকে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসাবে গণ্য করা হয়। ৩০১-৫০০ হলে সেই বাতাসকে বিপজ্জনক হিসাবে গণ্য করা হয়।
চলতি মাসের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে ফের একবার দিল্লির বায়ুুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। জবাবে কেন্দ্রের জমা দেওয়া হলফনামায় জানানো হয়েছিল,
দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নজরদারি দল তৈরি করা হয়েছে। এই ফ্লায়িং স্কোয়াডই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে, কোন কোন জায়গা থেকে দূষণ হচ্ছে, তা চিহ্নিত করেছে। এখনও অবধি ফ্লায়িং স্কোয়াড মোট ১৫৩৪টি জায়গায় পরিদর্শন করেছে এবং এরমধ্যে ২২৮টি জায়গাকে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে টাস্ক ফোর্স।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, কেবল উত্তর প্রদেশেই ১০২ টি শিল্পাঞ্চল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অতিক্রম করার জন্য এবং ৯০টি শিল্পকেন্দ্রকে নির্দেশ অমান্য করে সপ্তাহ শেষেও কাজ চালু রাখার জন্য জরিমানা করা হয়েছে।
কেন্দ্রের পাশাপাশি বায়ুর গুণমান নিয়ন্ত্রক কমিশনের তরফেও শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়, দূষণ নিয়ন্ত্রণে যে বিদ্যুৎ উৎপাদক কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে পুনরায় চালু করা হয়েছে। মূলত দিল্লি লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে যাতে বিদ্যুৎ ঘাটতি না দেখা যায়, সেই কারণেই এই প্ল্যান্টগুলি চালু করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হয়েছিল, কেবল উত্তর প্রদেশেই ১০২ টি শিল্পাঞ্চল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অতিক্রম করার জন্য এবং ৯০টি শিল্পকেন্দ্রকে নির্দেশ অমান্য করে সপ্তাহ শেষেও কাজ চালু রাখার জন্য জরিমানা করা হয়েছে।