নয়া দিল্লি: বছর শেষেই করোনা (COVID-19) থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করা হয়েছিল, কিন্তু ঘটল ঠিক উল্টোটাই। ওমিক্রন(Omicron)-র দাপটে বছর শেষে উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। রাজধানী দিল্লি(Delhi)-তেও তরতরিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন ও করোনা সংক্রমণ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩১৩।
বিগত ৭ মাস বাদে এই প্রথম দিল্লিতে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের গণ্ডি পার করল। গতকাল ১৩১৩ জন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় রাজ্যে সংক্রমণের হার বেডে দাঁড়িয়েছে ১.৭৩ শতাংশে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, একদিনেই দিল্লিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে গত ২৬ মে দিল্লিতে ১৪৯১ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। সেই সময় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ১৩০ হলেও, গতকাল নতুন করে কোনও করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়নি।
দৈনিক সংক্রমণ ৭০০-র গণ্ডি পার করতেই চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের (Delhi Disaster Management Authority) নির্দেশিকা অনুযায়ী, আপাতত দিল্লিতে সমস্ত অফিসে ৫০ শতাংশ হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিনেমা হল, জিম। মলের বিভিন্ন দোকান ও সাধারণ দোকান খোলা হবে জোড়-বিজোড় হিসেবে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা অবধি জারি থাকবে নৈশ কার্ফু। দোকানগুলির সময়সীমাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, সকাল ১০টায় দোকান খোলা ও রাত ৮টার মধ্যে তা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে প্রাক্টিকাল পরীক্ষা, প্রজেক্ট ও অ্যাসাইনমেন্ট অনলাইনেই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে দ্রুতগতিতে ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই চলতি সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল (Arvind Kejriwal)। বৈঠক শেষ হওয়ার পরই জারি করা হয়েছিল হলুদ সতর্কতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আপাতত আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই, তবে সকলকেই সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। সংক্রমণের হার ও হাসপাতালে বেডের সংখ্যার উপর নির্ভর করেই ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ কঠোর বা শিথিল করা হবে। এটিকে গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান বলা হচ্ছে।
একাধিক রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই গতকাল কেন্দ্রের তরফে ৮ রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। দিল্লি, মুম্বই ছাড়াও কলকাতা, গুরগাও, আহমেদাবাদ, রাজকোট, সুরাটের মতো শহরগুলিতেও আচমকা সংক্রমণ বৃদ্ধি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।
এই রাজ্যগুলিতে দ্রুত করোনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি, গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের উপর জোর, একান্তবাসের ব্যবস্থার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে।