লখনউ: উত্তর প্রদেশে ক্রমাগত বাড়ছে ডেঙ্গি সংক্রমণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে যথেষ্ট তৎপর যোগী সরকার। তবে দু’মাস আগেও পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। আক্রান্ত্রের নিরিখে কেরল, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ অনেক বেশি। পিছিয়ে নেই এই রাজ্যও। জুলাই মাস অবধি ডেঙ্গি সংক্রমণে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন ২২৪ জন।
কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক সূত্রে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে চলতি বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত যোগী রাজ্যে মোট ১৬০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। কারও মৃত্যু হয়নি। শুধু ডেঙ্গি নয় করোনা পরিস্থিতিও অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে এই রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৮ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ৬৮৬ হাজার ৪৯৭।
২০২১ জুলাই পর্যন্ত পরিসংখ্যা বলছে কেরলে রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬২৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৮৫ জন কারও মৃত্যু হয়নি। তৃতীয় স্থানে মহারাষ্ট্র। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ১৬৯। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। চতুর্থ ও পঞ্চমে রয়ছে রাজস্থান ও ওড়িশা। আক্রান্ত ৮৮৩ ও ৭৮৫ জন। দুই রাজ্যে মৃত্যুর কোনও তথ্য মেলেনি।
সামনেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। আর এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। গত সপ্তাহে বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী মায়াবতী অভিযোগ করেছেন সরকারি হাসপাতালগুলিতে নেই পর্যাপ্ত পরিকাঠামো। বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারাচ্ছেন ডেঙ্গি আক্রান্তরা। তবে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে ডেঙ্গি প্রতিরোধে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। চালু হয়েছে ৯৫ স্বাস্থ্য শিবির।
গোটা রাজ্যের মধ্যে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি ফিরোজ়াবাদে। জানা গিয়েছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে ডেঙ্গি ও ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন প্রায় ৬০ জন। শেষ ৪৮ ঘণ্টায় সেখানে মৃ্ত্যু হয়েছে ১৬ জনের। ক্রমশ বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে হাসপাতালগুলিতে শয্যার অভাব দেখা দিয়েছে। গতকাল ফিরোজ়াবাদে ডেঙ্গিতে এক শিশুমৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। প্রবল জ্বর নিয়ে পাঁচ বছরের সাবণ্য গুপ্তকে তার পরিবার সকাল ৮টা নাগাদ ফিরোজ়াবাদের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু বেড না থাকায় শিশুটিকে প্রথমে ভর্তি করতে পারেননি তাঁরা। হাসপাতালের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ছুটে বেড়িয়েছিলেন শুধুমাত্র শিশুটিকে যাতে ভর্তি করানো যায়। ঘটনার তিন ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর শিশুটি যখন হাসপাতালে ভর্তি হয় তখন তাঁকে আর প্রাণে বাঁচানো যায়নি। সাবণ্যর দাদা জানান,” সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে প্রাণে বাঁচানো যেত বোনকে। হাসপাতাল কর্মীদের একাধিকবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা কেউ শুনল না আমাদের কথা।”
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh Elections: কিসে পাশ, কিসে ফেল? বিধায়কদের ‘মার্কশিট’ দেবে যোগী রাজ্য