নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে চলছে শুনানি। কিন্তু, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের প্রসঙ্গ উঠতেই বারবার তাঁর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ‘প্রভাবশালী’ তকমা। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে যে পাহাড়-প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সেই আবহে তাঁর মতো ব্যক্তিকে জামিন দিলে সমাজে ঠিক কী বার্তা যেতে পারে তা ভাবাচ্ছে দেশের শীর্ষ আদালতদের বিচারপতিদেরও। এ নিয়ে স্পষ্ট প্রশ্ন করেছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। যদিও এদিন পার্থর জামিন নিশ্চিত করতেই শুরু থেকেই শক্ত হাতে ব্যাট চালাতে দেখা যায় আইনজীবী মুকুল রোহতগীকে।
মুকুলের দাবি, প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে বন্দি রয়েছেন পার্থ। এমনকী যে জায়গা থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই জায়গার মালিকানাও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নয়। সে ক্ষেত্রে এবার তাঁকে জামিন দেওয়া উচিত বলে মত তাঁর। কিন্তু, পার্থর দুর্নীতি প্রমাণে শুনানির শুরু থেকেই একাধিক যুক্তি দিতে থাকেন অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু।
কিন্তু, বিচারপতি সূর্যকান্তের দাবি, পার্থর জামিন প্রসঙ্গে অবশ্যই সামাজিক প্রভাবের কথা মাথায় রাখতে হবে। স্পষ্ট বলেন, আমাদের দেখতে হবে উনি মুক্তি পেলে তদন্তের উপর প্রত্যক্ষভাবে কীভাবে প্রভাব পড়তে পারে। আমরা আপাতত একটা ব্রেক (জামিন আটকানো প্রসঙ্গে) দিতে পারি। কিন্তু, অনির্দিষ্টকালের জন্য হতে পারে না। এরপরই পার্থ চট্টোপাধ্যায় মুক্তি পেলে তদন্ত কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে তা ইডি আইনজীবীর কাছে জানতে চান বিচারপতি সূর্যকান্ত। কারণ এখনও ট্রায়াল শুরু হয়নি। আর ঠিক সেই সময়ই একেবারে অন্য যুক্তি দিতে দেখা যায় মুকুল রোহতোগীকে। ‘প্রভাবশালী’ তকমা এড়াতে সাফ বলেন, প্রয়োজনে তাঁর মক্কেল ভিন রাজ্যে গিয়ে থাকবেন। অন্যদিকে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু জানান দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে চার্জ ফ্রেম করা হবে। এই মামলায় উঠে আসা বিভিন্ন সংস্থা পরোক্ষে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রাজুর। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য প্রায় পঞ্চাশ হাজার গরিব ছাত্র-ছাত্রী যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পাননি বলে ফের একবার অভিযোগ করেন রাজু। তাঁর দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন তাঁরা ওনাকে ভয় পান। তাই জামিন পেলে তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করা সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। যদিও দীর্ঘ সময় শুনানি চললেও শেষ পর্যন্ত এদিনের মতো তা স্থগিত হয়ে যায়। কোনও রায়ই দেননি বিচারপতি। পরবর্তী শুনানিতেই রায়দানের সম্ভাবনা থাকছে বলে খবর।