নয়া দিল্লি: করোনা মহামারি (Corona Pandemic) শুরু হওয়ার পর থেকে গোটা বিশ্বই ভাইরাসের প্রকোপে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার হয়ে উঠেছিল নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের অঙ্গ। অক্সিজেনের সঙ্কট, হাসপাতালে বেডের অভাবে চারিদিকে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে গিয়েছিল। করোনা সংক্রমণের জমাট বাঁধা অন্ধকারের মধ্যে প্রদীপ হয়ে জ্বলে উঠেছিল করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine)। ভ্যাকসিন আসার পর থেকে অনেকেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি পেয়েছেন, রুখে দাঁড়ানোর সাহস পেয়েছিলেন। এখন অনেক সময় পেরিয়ে গিয়েছে, করোনার হাত থেকে বাঁচতে প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকাকরণ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছোটদের টিকাকরণ অধরাই ছিল। এবার ছোটদের টিকাকরণের জন্য ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন (Covaxin) ব্যবহারের অনুমতি দিল ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিজিসিআই। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদেরকে এই ভ্যাকসিনের দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে ডিজিসিআই।
তবে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটির সুপারিশ মেনেই এই টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ডিজিসিআই। ডিজিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাকে সুরক্ষা পরিসংখ্যানের পাশাপাশি টিকার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। আগামী ২ মাস প্রত্যেক ১৫ দিন এই রিপোর্ট ডিজিসিআইয়ের কাছে জমা দিতে হবে। পরবর্তী ৫ মাস প্রত্যেক মাসে পরিসংখ্যান ডিজিসিআইয়ের কাছে জমা দিতে হবে।
২০২১ সালে ২৪ ডিসেম্বর ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জরুরি ভিত্তিতে কোভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। বর্তমানে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীকালে ডিজিসিআই জরুরি ভিত্তিতে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সীদের কর্বেভ্যাক্স দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। বর্তমানে ১২-১৪ বছর বয়সীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের এই টিকাকরণে অনুমতি প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক টিভি ৯ বাংলাকে বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরেই ছোটদের টিকা দেওয়ার কথা বলে আসছিলাম। উন্নত দেশগুলিতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুধুমাত্র রোগ আটকাতেই নয়, রোগের তীব্রতা আটকাতেই টিকাকরণ হওয়া প্রয়োজন। করোনার ৩ টি ঢেউয়ে শিশুরা সংক্রমিত হয়নি মানে এই নয় যে তাদের সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই। যে কোনও মুহূর্তে তারা সংক্রমিত হতে পারে। আশা করা যাচ্ছে আগামী মাসের প্রথম থেকেই এই টিকাকরণের কাজ শুরু হবে।”