নয়া দিল্লি: ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি। এর আগে দেশের রাজধানী ছিল কলকাতা। ব্রিটিশরাই ভারতে বাণিজ্য করতে এসে যখন ধীরে ধীরে ক্ষমতা দখল করছিল, সেই সময়ই বাণিজ্যে সুবিধার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (East India Company) কলকাতাকে দেশের রাজধানী বানিয়েছিল। কলকাতা থেকে দিল্লির রাজধানী হওয়ার ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই জানলেও, এটা জানেন কি অন্য একটি শহরও দেশের রাজধানী হয়েছিল? তাও আবার একদিনের জন্য।
১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর এলাহাবাদ, যা বর্তমানে প্রয়াগরাজ নামে পরিচিত, তাকে দেশের রাজধানী করা হয়। তবে এই রাজধানীর স্থায়িত্ব বেশিদিন ছিল না। মাত্র একদিনের জন্য প্রয়াগরাজকে দেশের রাজধানী করা হয়েছিল।
১৮৫৭ সাল থেকেই দেশে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছিল দিল্লি, আগ্রা ও মিরাট। এই অশান্তি থামাতেই রাজধানী বদলের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটিশ সরকার দিল্লিকে রাজধানী করতে চাইলেও, সেই সময় মুঘলরা দিল্লি শাসন করছিল, সেই কারণে ব্রিটিশরা ঢুকতে পারছিল না দিল্লিতে। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়তে তারাও নারাজ। দিল্লির আশেপাশেই শুরু হল জায়গা খোঁজা, যাকে রাজধানী বানানো যায়।
আগ্রা, মিরটে যেখানে বিদ্রোহের মুখে পড়তে হচ্ছিল ব্রিটিশদের, সেখানেই তৎকালীন এলাহাবাদ ব্রিটিশ শাসকদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। রানি ভিক্টোরিয়ার প্রস্তাবনা পাঠ করার জন্যই একদিনের রাজধানী করা হয় এলাহাবাদকে। ভাইসরয় লর্ড ক্য়ানিং রানির প্রস্তাবনা পাঠ করেন যমুনার পাড় থেকে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে ব্রিটেনের রানির শাসন জারি হয়। সহজ কথায় বলতে গেলে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরিত করে রানির শাসন জারি করার জন্যই এলাহাবাদকে একদিনের রাজধানী করা হয়েছিল।
১৮৫৮ সালের আগেও ব্রিটিশরা একাধিকবার এলাহাবাদকে রাজধানী করতে চেয়েছিল। ১৮৩৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রয়াগরাজ বা তৎকালীন এলাহাবাদকে উত্তর-পশ্চিম প্রদেশকে রাজধানী করার পরিকল্পনা করে। এই নিয়ে প্রস্তাবনাও আনা হয়, কিন্তু নানা সমস্যায় সেই প্রস্তাবনা খারিজ হয়ে যায়।