Companies Act: রাজনৈতিক দলগুলিকে কত টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে টাটা-অম্বানীরা, কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?

Feb 15, 2024 | 11:07 PM

Companies Act: ওই সংশোধনী কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে, লাগামছাড়া রাজনৈতিক অনুদান দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। আদালত, বলেছে এর ফলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এদিনের রায়, কোম্পানি আইনে করা মোদী সরকারের ওই সংশোধনীটিও বাতিল হল। এতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী পরিবর্তন ঘটল?

Companies Act: রাজনৈতিক দলগুলিকে কত টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে টাটা-অম্বানীরা, কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?
প্রতীকী ছবি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

নয়া দিল্লি: নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার সময়, এই প্রকল্প চালুর সময় ২০১৩ সালের কোম্পানি আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছিল, তারও সমালোচনা করেছে আদালত। ওই সংশোয়ধনী কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে, লাগামছাড়া রাজনৈতিক অনুদান দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। আদালত, বলেছে এর ফলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এদিনের রায়, কোম্পানি আইনে করা মোদী সরকারের ওই সংশোধনীটিও বাতিল হল। এতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী পরিবর্তন ঘটল? আসুন বিষয়টা বুঝে নেওয়া যাক –

আইন কী ছিল?

২০১৩ সালের কোম্পানি আইনের ১৮২ নম্বর ধারায়, ভারতীয় কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে, কোনও রাজনৈতিক দলের তহবিলে অনুদান দেওয়ার অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছিল। এই ধারায় পাঁচটি শর্ত ছিল – ১) অনুদানটির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বোর্ডের অনুমোদন থাকতে হবে, ২) নগদে কোনও অনুদান দেওয়া যাবে না, ৩) সংস্থার লাভ-লোকসান অ্যাকাউন্টে অনুদানের কথা জানাতে হবে, ৪) সংস্থা তার তিন বছরের গড় লাভের ৭.৫ শতাংশের বেশি দান করতে পারবে না এবং ৫) সংস্থা যে পার্টিকে দান করছে, তার নাম জানাতে হবে।

কী বদলানো হয়েছিল?

২০১৭ সালে এই আইনের একটি সংশোধনী এনেছিল মোদী সরকার। কোনও সংস্থা কত পরিমাণ অর্থ অনুদান দিতে পারবে, তার উপর যে সীমা আরোপ করা ছিল, তা সরিয়ে দিয়েছিল এই সংশোধনী। সেই সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোন পার্টিকে সংস্থাটি দান করছে, সেই পার্টির নাম প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা।

এর পিছনে সরকারের কী যুক্তি?

শীর্ষ আদালতে শুনানি চলাকালীন, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, দাতা সংস্থা যাতে কোনও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের মুখে না পড়ে, তার জন্যই কোন পার্টিকে তারা অনুদান দিচ্ছে, সেই দলের নাম প্রকাশ না করার কথা বলা হয়েছিল সংশোধনীতে। কোন দল সেই সংস্থার অনুদান পাচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট দলের বিরোধী পক্ষ জানতে পারলে, তাদের বিরূপ নজরে পড়তে পারে সংস্থাটি। তুষার মেহতা বলেন, “ধরুন, একজন ঠিকাদার হিসেবে আমি কংগ্রেস পার্টিকে অনুদান দিলাম। আমি চাইব, বিজেপি তা জানুক। তারা সরকার গঠন করতে পারে। পরে আমি তাদের কুনজরে পড়তে পারি।”

কর্পোরেট সংস্থার অনুদানের পরিমাণের উপর থেকে লাগাম তুলে নেওয়ার বিষয়ে তুষাড় মেহতা জানান, আগের প্রক্রিয়াটি অকার্যকর। অনুদানের সীমাকে ফাঁকি দিতে, অনেক সময় বড় কর্পোরেটরা ভুয়ো সংস্থা তৈরি করত। এই ধরনের ভুয়ো সংস্থা তৈরি করাকে নিরুৎসাহিত করতেই, অনুদানের উপর থেকে সীমার বাধা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “কোনও সংস্থা তাদের মোট লাভের ৭.৫ শতাংশের বেশি দান করবে কিনা, তা ঠিক করার অধিকার তাদের কাছে থাকুক।” তিনি আরও যুক্তি দেন, সীমা টানা হলে, সংস্থাগুলি নগদ অনুদান দিতে চাইবে। তাতে, কালো টাকার লেনদেন বাড়বে।

আদালত কী বলল?

কোম্পানি আইনের সংশোধনীটিকে অপ্রয়োজনীয় বলেছে আদালত। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, ব্যক্তি অবদানের থেকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনও কর্পোরেট সংস্থার প্রভাব বেশি থাকে। তারা অনুদান করে সম্পূর্ণভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থে। এটা লেনদেনের মতো। কোম্পানি আইনের ১৮২ নম্বর ধারার সংশোধনীতে সংস্থা এবং ব্যক্তিদের সমানভাবে দেখা হয়েছে, যা স্পষ্টতই অযৌক্তিক।” তিনি আরও বলেন, এই সংশোধনী আনার আগে, লোকসানে থাকা সংস্থাগুলি রাজনৈতিক অুনদান দিতে পারত না। এই সংশোধনী লোকসানে চলা সংস্থাগুলি এবং একটি রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে লেনদেনের সম্ভাবনা কুলে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে অর্থ দিয়ে, তার বিনিময়ে ওই লোকসানে চলা সংস্থা সরকারি সুবিধা পেতে পারে। যার মাধ্যমে তারা লাভজনক সংস্থায় পরিণত হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলিকে, কর্পোরেট সংস্থাগুলির এই লাগামহীন অনুদান দেওয়ার ক্ষমতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরোধী বলে জানিয়েছে আদালত। এর ফলে, কিছু ব্যক্তি বা সংস্থা সরকারি নীতি প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তাই এই সংশোধনী অসাংবিধানিকও বটে।

Next Article