নয়া দিল্লি : ভারতে কোভিড সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের দিক দিয়ে ৩ লক্ষের গণ্ডি পার করেছে ভারত। এহেন পরিস্থিতিতে কোভিড যোদ্ধা, স্বাস্থ্য কর্মী এবং কোমর্বিডিটি আছে এমন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে কেন্দ্র। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, ভবিষ্যতে কি প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশুরাও নিতে পারবে এই বুস্টার ডোজ? এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিজের মতামত রেখেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন বলেছেন যে, সুস্থ শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োজন এমন কোনও প্রমাণ নেই। ওমিক্রন সম্পর্কে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে প্রতিটি নতুন রূপের জন্য একটি নতুন ভ্যাকসিন তৈরি করার দরকার নেই।
শিশুদের কি বুস্টার ডোজের প্রয়োজন আছে?
গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত এরকম কোনও প্রমাণ নেই যে সুস্থ শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ লাগতে পারে।” ইতিমধ্যেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইজরায়েলে শিশুদের বুস্টার দেওয়া শুরু হয়েছে। ভারতে এই মাসের শুরুতেই ১৫-১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে।
বুস্টার ডোজ কাদের প্রয়োজন?
স্বামীনাথন উল্লেখ করেছেন যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার প্রভাব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পেতে শুরু করে। কার বুস্টার ডোজ প্রয়োজন তা নিশ্চিত করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
তিনি জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশ কীভাবে তাদের জনসংখ্যাকে বুস্টার ডোজ দেওয়া উচিত সেই বিষয়ে আলোচনা করতে এই সপ্তাহের শেষের দিকে নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা মিলিত হবেন। তিনি বলেছেন,”লক্ষ্য হল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষা করা, গুরুতর রোগ এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে এমন ব্যক্তিদের রক্ষা করা,”। “তারা হলেন দেশের বয়স্ক জনগণ, যাদের অনাক্রম্যতা ক্ষমতা কম, এবং স্বাস্থ্য কর্মীরাও।”
ওমিক্রনকে কাবু করতে কি আমাদের নতুন টিকার প্রয়োজন?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী নিশ্চিত করেছেন যে, প্রতিটি নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য নতুন করে টিকা তৈরির কোনও প্রয়োজন নেই। বরং আমাদের গবেষণা করতে হবে। যাতে করোনা ভাইরাসের সব ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে একটিই টিকা কাজ দেয়। তিনি আরও বলেছেন যে, যেসব শিক্ষাবিদরা অ্যান্টিবডিগুলি নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করছেন তাঁরা টিকা প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে একসাথে কাজ করে টিকার পর্যায়ক্রম নিয়ে একমত পোষণ করতে পারেন।
কোভিডের বিরুদ্ধে বর্তমান টিকা কেমন কাজ করছে?
স্বামীনাথন বলেছেন, “বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে করা সব করোনা টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কিত সমীক্ষার ট্র্যাক রাখছে।” তিনি আশ্বস্ত করেন যে, ভ্যাকসিনগুলি মানুষকে গুরুতর অসুস্থতা, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করছে। তিনি বলেছেন, “যেসব দেশ বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে, তাদের টিকা দেওয়ার পর থেকে বয়স ও সময়েয়র ভিত্তিতে টিকার কর্মক্ষমতা তথ্য তৈরি করতে বলেছি। যদিও বেশিরভাগ টিকা এখনও গুরুতর রোগ এবং মৃত্যুর বিরুদ্ধে ভাল সুরক্ষা প্রদান করে, তবুও নীতি অবহিত করার জন্য কর্মক্ষমতা ট্র্যাক করা গুরুত্বপূর্ণ।”
আরও পড়ুন : Goa Assembly Election 2022 : “মিথ্যে কথা বললে মানহানির মামলা করুন”, জোট তরজা নিয়ে পি চিদম্বরমকে তোপ অভিষেকের