নয়া দিল্লি : কয়লা সঙ্কটের জেরে গোটা দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতির (Power Crisis) সম্ভাবনা আরও জোরদার হচ্ছে। সবথেকে বেশি উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে পঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্র প্রদেশ নিয়ে। পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে শীঘ্রই অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে এই তিন রাজ্য। প্রসঙ্গত, প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতেই ভারতে ভারতে বিদ্যুতের চাহিদা এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু এবারের পরিস্থিতিটা খানিক আলাদা। করোনা সঙ্কটের জেরে গত প্রায় দু’বছরের বেশি সময় ধরে ভারতে সম্পূর্ণ স্তব্ধ ছিল শিল্প ক্ষেত্রগুলি। সেই কারণেই বিদ্যুতের চাহিদা পুরো মাত্রায় ছিল না। বর্তমানে ফের করোনা মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে গোটা দেশ। আর সেই কারও আরও বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। সূত্রের খবর, চাহিদার থেকে কম জোগান রয়েছে বিদ্যুতের। যদিও দুদিন আগেই সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল কোনও সঙ্কট নেই। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মজুত রয়েছে ৩০ দিনের কয়লা। কিন্তু তারপরেও কমেনি উদ্বেগ।
যদিও বর্তমান পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে দেশের একটা বড় অংশে দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কর্ণাটকের একটা বড় অংশে ২১ এপ্রিল ও ২২ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা মিলবে না বলে জানানো হয়েছে। তাতেও দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে নতুন করে দানা বেঁধেছে আশঙ্কার মেঘ। একই অবস্থা অন্ধ্র প্রদেশের। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশ ও পঞ্জাবেও শীঘ্রই এই অবস্থা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ভারতে এই সঙ্কট নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে এবারের পরিস্থিতি যে বেশ গুরুতর বলেই মত অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র দুবে। এদিকে দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার জোগান ২০ শতাংশের নীচে নেমে গিয়েছে বলে কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল। গত ন’বছরের তুলনায় এই এই পরিমাণ সর্বনিম্ন বলে রেল সূত্রে খবর। তবে সঙ্কট মেটানোর জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির পাশাপাশি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাঠে নেমেছে ভারতীয় রেল।
কয়লা পরিবহনের জন্য রেকের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুটি সাপ্লাই লাইনে নির্মাণ কাজ চলতে থাকার কারণেই দেশব্যাপী কয়লা পরিবহন জোরদার ধাক্কা খাচ্ছে বলে মত ভারতীয় রেলের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর গৌরব কৃষ্ণ বনসল। আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত এই কাজ চালু থাকাবে। তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সঙ্কট মোকাবিলা করার জন্য আরও ১ লক্ষ ওয়াগন কেনার টেন্ডার ইতিমধ্যেই জারি করেছে রেল। এদিকে বর্তমানে ভারতে তৈরি মোট বিদ্যুতের ৭০ শতাংশ আসে তাপবিদ্যুৎ থেকে।
আরও পড়ুন – হু প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসাসকে ‘তুলসি ভাই’ বলে ডাকলেন মোদী