নয়া দিল্লি: হংকংয়ে নীরব মোদী গ্রুপ অব কোম্পানিজ়-এর রত্ন, গয়না এবং ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের মতো অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শুক্রবার এমনই জানাল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। ইডির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, যে সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত করা এই অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২৫৩.৬২ কোটি টাকা। ফলে নীরব মোদীর মোট বাজেয়াপ্ত করা সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ালো ২৬৫০.০৭ কোটি টাকা। হীরক ব্যবসায়ী নীরব মোদী ভারতে পলাতক আর্থিক অপরাধী হিসেবে ঘোষিত। পাশাপাশি ইন্টারপোলের খাতাতেও তার নাম রয়েছে। ২০১৮ সালে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ৬,৪৯৮.২০ কোটি টাকা জালিয়াতি করে পালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, তহবিল তছরুপের মামলার তদন্তের সময়, হংকং-এ নীরব মোদী গ্রুপ অফ কোম্পানিজ়-এর কিছু সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। ব্যক্তিগত ভল্টে কিছু রত্ন, গয়না এবং হংকংয়ের ব্যাঙ্কে জমা থাকা কিছু আমানত চিহ্নিত করে তদন্তকারী সংস্থাটি। বেআইনি তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনের পঞ্চম ধারার অধীনে অবিলম্বে সেই সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রত্ন এবং গহনাগুলির মূল্য ছিল ৩০.৯৮ কোটি মার্কিন ডলার। আর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের পরিমাণ ছিল ৫৭.৫ লক্ষ মার্কিন ডলার। এর আগে, এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট, নীরব মোদী এবং তার সহযোগীদের ভারত এবং বিদেশে রাখা স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে মোট মোট ২৩৯৬.৪৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে ইডির এক পদস্থ কর্তা বলেছেন, ‘এই মামলার আগে, বেআইনি তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে নীরব মোদী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে আরও ২টি প্রসিকিউশন অভিযোগ দায়ের করেছে ডাইরেক্টরেট। একই সঙ্গে, যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে পলাতক নীরব মোদীকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’ প্রসঙ্গত, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের এক কারাগারে বন্দী আছে ৫০ বছর বয়সী নীরব মোদী। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় তাকে দেশে ফেরানোর জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিল ভারত সরকার। যার বিরুদ্ধে বিলেতের আদালতে আবেদন করেছিল এই পলাতক আর্থিক অপরাধী। তবে, সম্প্রতি সেই মামলায় তার হার হয়েছে। ফলে তার দেশে ফেরাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
জুন মাসের শেষে নীরব মোদীর ভারতে প্রত্যার্পণের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আবেদনের শুনানির সময় তার আইনজীবী নতুন আপত্তি উত্থাপন করেন। তাতেই ফের বিলম্বিত হয়েছে এই প্রক্রিয়া। পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা আগামী অক্টোবর মাসে। ভারতের হাতে তুলে দিলে নীরব মোদীর আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, এইভাবে তাকে প্রত্যার্পণ করা নিপীড়ন হবে কি না – এই সকল বিষয়গুলি বিবেচনা করা হবে। সরকার ও নীরব মোদী – দুই পক্ষ থেকেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।