নয়া দিল্লি: আরও সমস্যা বাড়ল দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের। মঙ্গলবার (৭ জুন), এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সত্যেন্দ্র জৈন এবং তাঁর সহযোগীদের বিভিন্ন বাড়ি ও কার্যালয়ে হানা দিয়ে ২.৮২ কোটি টাকার অঘোষিত নগদ এবং ১৩৩টি সোনার কয়েন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোনার কয়েনগুলির মোট ওজন ১.৮০ কেজি। ইডি আরও জানিয়েছে, সোমবার দিনভর সত্যেন্দ্র জৈন এবং তাঁর পরিচিত কয়েকজনের বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ইডির দাবি, এই সকল অর্থ ও সোনার কয়েনগুলি গোপন জায়গায় লোকানো ছিল এবং সেগুলি কোথা থেকে এল, তার কোনও উপযুক্ত ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়নি।
ইডির পক্ষ থেকে এই বাজেয়াপ্ত করা নগদ ও সোনার কয়েনের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, বেআইনি অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনের আওতায় হওয়া মামলার তদন্তে সত্যেন্দ্র কুমার জৈন, পুনম জৈন, অঙ্কুশ জৈন, বৈভব জৈন, নবীন জৈন এবং সিদ্ধার্থ জৈন, সিএস মাথারু এবং যোগেশ কুমার জৈনের বাড়ি বা কার্যালয়ে তল্লাশ অভিযান চালানো হয়েছে। সব মিলিয়ে দিল্লি এবং তার আশপাল শের ৭টি জায়গায় হানা দেয় ইডি। তদন্তে জানা গিয়েছে মেসার্স লালা শের সিং জীবন বিজ্ঞান ট্রাস্ট নামে একটি সংস্থাই, সত্যেন্দ্র জৈনের মালিকানাধীন এক সংস্থার থেকে জমির মালিকানা স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়েছিল।
Enforcement Directorate seized Rs 2.82 crores of cash & 133 gold coins weighing 1.80 kg under PMLA from unexplained sources to be secreted in the premises of Delhi Health Minister Satyendar Jain & his aide during its day-long raid conducted on June 6. Further probe underway: ED pic.twitter.com/wLd8OVQPMl
— ANI (@ANI) June 7, 2022
গত ৩০ মে বিকালে, দিল্লির আপ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে অর্থ পাচারের দায়ে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডি। কলকাতার এক হাওয়ালা সংস্থার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার অবৈধ উপার্জন পাচারের অভিযোগ করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। এরপর, সত্যেন্দ্র জৈনকে ৯ জুন পর্যন্ত ইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ ইডি আদালতের বিচারপতি জানিয়েছিলেন, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র উদঘাটনের প্রয়োজনে দিল্লির মন্ত্রীকে তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে রাখতে হবে। তারও আগে, গত এপ্রিলে মাসে সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর পরিচিতদের এবং মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলির ৪.৮১ কোটি টাকার সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
ইডির দাবি, ২০১৫-২০১৬ সালে সত্যেন্দ্র জৈন ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলিতে হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভুয়ো সংস্থাগুলি থেকে ৪.৮১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঢুকেছিল। কলকাতায় হাওয়ালা অপারেটরদের কাছে ওই সংস্থাগুলি থেকে নগদ অর্থ পাঠানো হত। তারা সত্যেন্দ্র জৈনের সংস্থাগুলিতে ওই অর্থ জমা করে দিত। সেই অর্থ ব্যবহার করেই দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় জমি কিনেছিলেন সত্যেন্দ্র জৈন। কৃষি জমি কেনার জন্য নেওয়া ঋণও পরিশোধ করেছিলেন তিনি।
২০১৭ সালের অগাস্টে আয়-ব্যায়ে অসঙ্গতি রয়েছে বলে সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। তারপরই এই তদন্ত শুরু করেছিল ইডি। সিবিআই দাবি করেছিল, ওই অবৈধ উপার্জন ব্যবহার করে ৫ বছরে ২০০ বিঘা কৃষি জমি কিনেছিলেন সত্যেন্দ্র জৈন। কোটি কোটি টাকা মূল্যের কালো টাকার লেনদেন করা হয়েছিল। আয়কর বিভাগ থেকেও এই অবৈধ লেনদেনগুলির বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছিল। কিছু বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল, যেগুলির সঙ্গে সত্যেন্দ্র জৈনের যোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল।