নয়া দিল্লি: ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা। তার আগে দেশের অন্তত ১৫০ জেলাশাসককে ফোন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গুরুতর অভিযোগ বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের। তাঁর এই দাবির বিষয়ে বাস্তব তথ্য চাইল নির্বাচন কমিশন। রবিবার (২ জুন), জয়রাম রমেশকে একটি চিঠি দিয়েছে কমিশন। এদিন সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে তাঁর দাবি সমর্থনে বিশদ তথ্য পেশ করতে বলা হয়েছে তাঁকে।
শনিবার ভোট শেষ হওয়ার পরই জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন, ১৫০ জেলা আধিকারিকদের ফোন করেছেন অমিত শাহ। তিনি দাবি করেন, এতেই বোঝা যায়, বিজেপি কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তিনি আরও জানান, এই চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে সরকারি কর্তাদের উচিত সংবিধানকে সমুন্নত রাখা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস নেতা লেখেন, “বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেলাশাসকদের ফোন কেছেন। এখনও পর্যন্ত, তিনি তাঁদের মধ্যে ১৫০ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এটি নির্লজ্জ ভীতি প্রদর্শন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি কতটা মরিয়া। স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগণের ইচ্ছাই বিজয়ী হবে। ৪ জুন, মিস্টার মোদী, মিস্টার শাহ এবং বিজেপিকে চলে যেতে হবে। ইন্ডিয়া জনবন্ধন বিজয়ী হবে। অফিসারদের কোন চাপের মধ্যে না পড়ে সংবিধানকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তাদের উপর নজর রাখছি।”
জবাবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কোনও জেলাশাসক বা অন্য কোন আধিকারিক, তাদের উপর কোনও “অযাচিত চাপ” এসেছে বলে রিপোর্ট করেননি। কমিশন তার চিঠিতে বলেছে, “আপনি একটি জাতীয় দলের একজন দায়িত্বশীল অভিজ্ঞ এবং খুব বরিষ্ঠ নেতা। সেই হিসাবে, গণনার ঠিক আগে আপনি অবশ্যই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রকাশ্যে এমন বিবৃতি দিয়েছেন। যে তথ্য আপনি সত্যি বলে মনে করেছেন। আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে, যে ১৫০ জন জেলাশাসককে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করেছেন বলে আপনি অভিযোগ করছেন, আজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে তাদের বিস্তারিত বিবরণ বাস্তবিক তথ্য-সহ আমাদের দিন। তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারব।”
কমিশন আরও জানিয়েছে, আদর্শ আচরণ বিধি বলবৎ থাকাকালীন, সমস্ত সরকারি কর্তাই কমিশনের অধীনে আছেন এবং কমিশনের নির্দেশেই কাজ করছেন। তাঁরা এই মুহূর্তে সরাসরি কমিশনেই রিপোর্ট করেন। তবে, কোনও জেলাশাসক এই জাতীয় কোনও অযৌক্তিক রিপোর্ট করেননি। তারা আরও বলেছে, প্রত্যেক রিটার্নিং অফিসারের উপরই ভোট গণনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব থাকে। জয়রাম রমেশের এই ধরনের প্রকাশ্য বিবৃতি তৈাদের উপর এক সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করে। তাই, বৃহত্তর জনস্বার্থে এর সমাধান করা প্রয়োজন। .
এখনও পর্যন্ত কমিশনের চিঠির কোনও জবাব না দিলেও, রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে জয়রাম রমেশ বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। তবে একে নিরপেক্ষ হতে হবে। জনগণ শুধু দল ও প্রার্থীদের উপরই নজর রাখছে না, নির্বাচন কমিশনের কাজকর্মও দেখছে। নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত যেভাবে কাজ করেছে, তাতে আমরা তার উপর আস্থা রাখতে পারছি না। যেহেতু এটি একটি সাংবিধানিক সংস্থা, এর একটা মর্যাদা রয়েছে, তাই আমরা একে সম্মান করি।”