পাক চরদের হাতে ‘ব্রহ্মস’-এর গোপন তথ্য! যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কৃতী বিজ্ঞানীর
BrahMos Aerospace Engineer Gets Life Imprisonment: দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের অন্যতম সেরা সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হল 'ব্রহ্মস'। এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে গোপন তথ্যাবলী, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা, আইএসআই-এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন কৃতী বিজ্ঞানী। সোমবার (৩ জুন), এই অপরাধে, 'ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস' সংস্থার প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার, নিশান্ত আগরওয়ালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল নাগপুর জেলা আদালত।

নাগপুর: দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের অন্যতম সেরা সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হল ‘ব্রহ্মস’। জল, স্থল, বায়ু, এমনকি জলের নীচ থেকেও উৎক্ষেপণ করা যায় এই ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতের সুরক্ষার জন্য অন্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে গোপন তথ্যাবলী, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা, আইএসআই-এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন কৃতী বিজ্ঞানী। সোমবার (৩ জুন), এই অপরাধে, ‘ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস’ সংস্থার প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার, নিশান্ত আগরওয়ালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল নাগপুর জেলা আদালত। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডিফেন্স অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও এবং রাশিয়ার মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কনসোর্টিয়ামের এক যৌথ উদ্যোগ এই ‘ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস’।
আইএসআই-এর হয়ে চরবৃত্তি করার দায়ে, তাঁকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক, এমভি দেশপান্ডে জানিয়েছেন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের পাশপাশি, তথ্য প্রযুক্তি আইন এবং ফৌজদারি কার্যবিধির অধীনেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এই প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারকে। ফলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১৪ বছরের জন্য সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩,০০০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে নিশান্ত আগরওয়ালকে।
২০১৮ সালেই ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কিত বিভিন্ন গোপন উপাদান আইএসআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার সন্দেহে, গ্রেফতার করা হয়েছিল নিশান্ত আগরওয়ালকে। সেই সময় তিনি নাগপুরে ব্রহ্মসের ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রের প্রযুক্তিগত গবেষণা বিভাগে নিযুক্ত ছিলেন। সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দলেই কাজ করতেন। সামরিক গোয়েন্দা এবং উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী স্কোয়াডের এক যৌথ দল তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। জানা গিয়েছিল, নেহা শর্মা এবং পূজা রঞ্জন নামে দুটি ফেসবুক প্রোফাইলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন নিশান্ত আগরওয়াল। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন, ওই দুটি ফেক প্রোফাইল ছিল। পিছনে ছিলেন পাকিস্তানি গোয়েন্দারা। ইসলামাবাদ থেকে আইএসআই এজেন্টরাই ওই প্রোফাইল দুটি চালাতেন।
নিশান্ত আগরওয়ালের গ্রেফতারি আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। প্রথমত, ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস-এ সেই প্রথম কোনও গুপ্তচর ধরা পড়েছিল। দ্বিতীয়ত, নিশান্ত আগরওয়াল এই কাজ করতে পারেন, তা তার সহকর্মীরা ভাবতেই পারেননি। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের সেরা তরুণ বিজ্ঞানীর পুরস্কার জিতেছিলেন নিশান্ত। তার আগে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন, কুরুক্ষেত্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে। অত্যন্ত প্রতিভাধর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ব্রহ্মস সংস্থায় চার বছর কাজ করেছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছিল, অনলাইনে কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সেই বিষয়ে উদাসীন ছিল নিশান্ত। এর ফলেই, সে আইএসআই-এর সহজ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল।
