‘ভারত-চিন সম্পর্ক তৃতীয় দেশের চোখ দিয়ে না দেখাই শ্রেয়’, বার্তা বিদেশমন্ত্রীর, দ্রুত সেনা প্রত্যাহারে জোর

India China Talk on Disengagement at SCO Summit: বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানান, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতেই সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। আর এই সম্পর্ককে মজবুত করতেই চিনের উচিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য কোনও তৃতীয় দেশের চোখ দিয়ে যেন না দেখা হয়।

ভারত-চিন সম্পর্ক তৃতীয় দেশের চোখ দিয়ে না দেখাই শ্রেয়, বার্তা বিদেশমন্ত্রীর, দ্রুত সেনা প্রত্যাহারে জোর
ছবি: টুইটার।

| Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Sep 17, 2021 | 3:11 PM

নয়া দিল্লি: আফগানিস্তানের উত্তপ্ত  পরিস্থিতির মাঝেই মুখোমুখি হল ভারত ও চিন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar) ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই (Wang Yi) এ দিন বৈঠকে বসেন, তবে আফগানিস্তান (Afghanistan) নয়, এ দিনের বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (Line of Actual Control) নিয়েই আলোচনা হল দুই দেশের মধ্যে। ভারত-চিন সম্পর্ক তৃতীয় কোনও পক্ষের চোখ দিয়ে না দেখাই শ্রেয়, এ কথাও বলেন বিদেশমন্ত্রী।

তাজিকিস্তানের রাজধানীতে সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের যে বৈঠক সম্মেলন শুরু হয়েছে, তাতেই যোগ দিয়েছে ভারত ও চিন। সদস্য দেশগুলির প্রধানমন্ত্রীদের পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রীরাও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সেখানেই ভার্চুয়াল আলোচনায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পূর্ব লাদাখ থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গটি তোলেন। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় আটকে থাকা সেনা প্রত্যাহারের কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন বলেই জানান তিনি।

বৈঠকে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীই সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে দুই পক্ষেরই সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরের শীর্ষনেতাদের শীঘ্রই বৈঠকে বসা নিয়ে সহমত পোষণ করেন।  বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চিনের বিদেশমন্ত্রীকে বলেন, ভারত কখনওই সংঘর্ষের তত্ত্ব মেনে চলেনি এবং ভারত-চিনের পারস্পরিক সম্পর্কের উপরই গোটা এশিয়ার ঐক্য নির্ভর করছে।

একইসঙ্গে তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতেই সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। আর এই সম্পর্ককে মজবুত করতেই চিনের উচিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অন্য কোনও তৃতীয় দেশের চোখ দিয়ে যেন না দেখা হয়। বৈঠক শেষে টুইটেও বিদেশমন্ত্রী এই বিষয়টিই উল্লেখ করেন। তবে জয়শঙ্কর বৈঠকে “তৃতীয় দেশ” বলে উল্লেখ করলেও, বিদেশমন্ত্রকের তরফে “তৃতীয় দেশগুলি” বলা হয়েছে, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

বিদেশমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে কেবল প্রকৃত  নিয়ন্ত্রণ রেখা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের কথা উল্লেখ করা হলেও সূত্রের খবর, দুুই দেশের মধ্যে আফগানিস্তান প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। তালিবানের ক্ষমতা দখল ও পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। তবে বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কীভাবে শান্তি ফেরানো যায়, তা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বৈঠকে জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার লক্ষ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও বাকি সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে শান্তি স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।

দ্রুত দুই দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক নেতৃত্ব এই বিষয়ে আলোচনায় বসবে, এ কথাও জানানো হয়েছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে। গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরে দুই দেশের জন্য়ই মঙ্গলদায়ক নয় এবং এর জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও খারাপ প্রভাব পড়েছে, তা স্বীকার করে নেওয়া হয় বৈঠকে।

গত ১৪ জুলাইয়ের বৈঠকের পর দুই পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভাল কাজ করেছে, তা স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে এখনও পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে একাধিক সংঘর্ষস্থলে কাজ করা বাকি, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।