নয়া দিল্লি: সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েন নতুন নয়, কিন্তু দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পরও সেই বিরোধের সমাধান না হয়নি। এরইমধ্যে আবার ভারকের আপত্তি সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কার বন্দরে নোঙর করেছে চিনের গুপ্তচর জাহাজ। এই পরিস্থিতিতেই ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “বেজিং সীমান্তে যা করেছে, তারপর অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ভারত-চিনের পারস্পরিক সম্পর্ক”। যদি প্রতিবেশী দুই দেশ হাতে হাত মিলিয়ে না চলে, তবে কোনওদিনই এশিয়ায় ঐক্য তৈরি হবে না।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে “ইন্ডিয়া’স ভিশন অব দ্য় ইন্দো-প্যাসিফিক” বিষয়বস্তুর উপরে বক্তব্য রাখতে গিয়েই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারত ও চিনের সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এশিয়ার শতক কবে তৈরি হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “যখন ভারত ও চিন একজোট হবে, তখনই এশিয়ান শতক তৈরি হতে পারে। কিন্তু দুই দেশ যদি হাতে হাত মিলিয়ে ন চলে, তবে তা হওয়া খুবই কঠিন। চিন ভারতীয় সীমান্তে যা করেছে, তারপর বর্তমানে ভারত ও চিনের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাস থেকে দুই দেশের মধ্যে যে বিরোধ ও সংঘর্ষ শুরু হয়, সেই প্রসঙ্গেই কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী। জুন মাসে গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বিরোধ মেটাতে এখনও অবধি দুই দেশের মধ্যে ১৬ দফা কর্পস কম্যান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনও সমাধানসূত্রই মেলেনি।
বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর আরও বলেন, “আমার মনে হয় যদি ভারত ও চিন একসঙ্গে মিলিতভাবে চলে, তবে অনেক সমস্যারই সমাধান সম্ভব। শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কা নয়, এছাড়াও একাধিক কারণ রয়েছে একজোট হওয়ার। এতে দুই দেশেরই লাভ হবে। আমরা আশা করছি এই বিষয়টি যেন চিন বুঝতে পারে।”
শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কট ও ভারতের অবস্থান নিয়েও কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি জানান, সর্বসম্মতভাবে ভারত শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। শুধু এই বছরই ভারত শ্রীলঙ্কাকে ৩৮০ কোটি ডলারের আর্থিক সাহায্য করেছে ক্রেডিট লাইনে। আন্তর্জাতিক মনিটারি ফান্ডের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য পাইয়ে দেওয়া যায় কি না, তাও ভারতের তরফে চেষ্টা করা হবে বলে জানান বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর।