নয়া দিল্লি : পূর্ব ঘোষণা মত সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা নয়া দিল্লিতে সোমবার বৈঠক করল। বৈঠকের পরই পুনরায় আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেন এসকেএম নেতা রাকেশ টিকায়েত। ২১ মার্চ থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে। তাঁরা এদিন বলেছেন, “মোদী সরকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।” উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে সরাসরি কোনও দলের হয়ে না লড়লেও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল এসকেএম। তবে সেই তাদের আশায় জল ঢেলে উত্তর প্রদেশে পুনরায় ক্ষমতায় আসে বিজেপির সরকার। ১৩ মাসের আন্দোলন ‘স্থগিত’ করার পর এই প্রথম বৈঠকে বসল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিবর্তে দিল্লির বাইরে অনেকগুলো দফায় বিক্ষোভ দেখাবেন কৃষকরা। যেরকম গত বছর আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। ২১ মার্চ প্রথম বিক্ষোভ প্রদর্শন হবে। পরবর্তী দফার বিক্ষোভ হবে ৯-১৭ এপ্রিলে। এপ্রিলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে দেশব্যাপী ধর্মঘট করবেন কৃষকরা। এসকেএম এর প্রধান মুখ রাকেশ টিকায়েত এদিন বলেছেন, “এসকেএম মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ওয়াদা-খিলাফি আন্দোলনের (প্রতিশ্রুতি ভাঙার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ) সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” কৃষক নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, “কৃষকদের জন্য সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হল সরকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও, কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি এবং লখিমপুর খেরিতে হত্যাকাণ্ডের জন্য কৃষকরা প্রকৃত বিচার পায়নি।”
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ২০২০ এর নভম্বরে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। দিল্লির সীমানায় এক বছর ধরে এই আন্দোলন চলেছিল। তবে পঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের আগে গুরু নানকের জন্মদিনের দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি কেন্দ্র তাঁদের বাকি দাবিদাওয়াগুলিও মেনে নেন। তারপর কৃষক সংগঠনগুলি তাদের আন্দোলন ‘স্থগিত’ করেন। এবং দিল্লির সীমানা থেকে নিজেদের ঘরে ফিরে যান। আন্দোলন স্থগিত করার পর তাঁরা জানান যে কেন্দ্র তাদের প্রতিশ্রুতি গুলি পালন করছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে নিয়মিত অন্তরালে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছিল কৃষক সংগঠনগুলি। প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশে নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন রাকেশ টিকায়েতকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন যে কৃষকরা শাসক দলের বিরুদ্ধেই রয়েছেন। তাই কৃষক অধ্যুষিত পশ্চিম উত্তর প্রদেশে বিজেপির ফলাফল ভালো না হওয়ার সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছিল। কিন্তু ১০ মার্চ সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে পশ্চিম উত্তর প্রদেশে ভালো ফল করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন : UP Assembly Election 2022 : বিজেপির বিজয় মিছিলে সপা নেতা, গায়ে ঢাললেন পেট্রোল, তারপর কী হল দেখুন