নয়া দিল্লি: এক বছর পূর্ণ হচ্ছে কৃষক আন্দোলনের। কৃষি আইন প্রত্য়াহারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল দেশজুড়ে, সেই দাবি পূরণ হলেও এখনও আন্দোলন প্রত্য়াহার করেনি কৃষকরা। গত বছর ২৬ নভেম্বর দিল্লির সীমান্তে যে কৃষক আন্দোলনের সূচনা হয়, আজ তার বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্য়ে দেশজুড়ে বিশাল কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে আন্দোলনকারী কৃষকরা। ইতিমধ্যেই রাজধানী দিল্লিতেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে কৃষকদের আন্দোলন কর্মসূচি মাথায় রেখে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকেই দিল্লির তিন সীমান্ত অর্থাৎ সিংঘু, টিকরি ও গাজিপুরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও মেট্রো স্টেশনগুলিতে নিরাপাত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এ দিকে, সংযুক্ত কিসান মোর্চার তরফেও বিবৃতি জারি করে তাদের একাধিক কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। কৃষক সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বিগত ১২ মাস ধরে দেশজুড়ে যে দীর্ঘতম ও বৃহত্তম আন্দোলন চলছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে লেখা থাকবে। কেবল দেশের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি এই আন্দোলন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষও সমর্থন জানিয়েছেন। কোটি কোটি মানুষ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, যা প্রতিটি রাজ্য়ে, প্রতিটি জেলায় এবং প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বাদে এই কৃষক আন্দোলন একাধিক সাফল্য অর্জন করেছে কৃষক, সাধারণ মানুষের জন্য। ”
সংযুক্ত কিসান মোর্চার ডাকে আজ কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে দিল্লিতে বিরাট আন্দোলন কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকও শ্রমিকরা এই আন্দোলনে যোগ দেবেন। দিল্লির আশেপাশের রাজ্য থেকে হাজার হাজার কৃষকরা আসতে শুরু করেছেন। দূরের রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন জনসভা, ধর্ণা, মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
কর্নাটকে কৃষকরা বড় বড় হাইওয়েগুলি অবরোধ করবেন বলে জানা গিয়েছে। বিহার ও মধ্য প্রদেশে প্রতিটি জেলায় ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে মিলিতভাবে তাদের প্রধান দফতরে আন্দোলন কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। রায়পুর ও রাঁচীতেও ট্রাক্টর মিছিল বের করার পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতা সহ রাজ্যের একাধিক জেলাতেও কৃষকরা বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলির তরফে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হলেও তাদের তরফে জানানো হয়, সংসদ অধিবেশনে আইন প্রত্যাহারের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি আন্দোলন জারি রাখা হবে। একইসঙ্গে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্য়ারান্টি, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল সহ কৃষকদের একাধিক দাবি নিয়েও আলোচনা করতে হবে।
আরও পড়ুন: NFHS Report: স্বাধীনতার পর এই প্রথম, দেশে পুরুষদের তুলনায় বাড়ল মহিলাদের সংখ্যা!