১০০ দিনে পা আন্দোলনের, ৫ ঘণ্টা পথ অবরোধ করে ‘কালা দিবস’ পালন কৃষকদের

নয়া দিল্লি: একাধিক বৈঠক, ২০০-রও বেশি আন্দোলনকারীর মৃত্যু, প্রজাতন্ত্র দিবসে হিংসা- সব মিলিয়েই দেখতে দেখতে ১০০ দিন পূর্ণ হল কৃষক আন্দোলনের(Farmers Protest)। এই দিনটিকেই “কালা দিবস” হিসাবে পালন করতে শনিবার পাঁচঘণ্টার জন্য কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল আন্দোলনকারী কৃষকরা। এদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৪টে অবধি ১৩৫কিমি দীর্ঘ কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে (Kundli-Manesar-Palwal Expressway) আটক […]

১০০ দিনে পা আন্দোলনের, ৫ ঘণ্টা পথ অবরোধ করে 'কালা দিবস' পালন কৃষকদের
কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।
Follow Us:
| Updated on: Mar 06, 2021 | 1:12 PM

নয়া দিল্লি: একাধিক বৈঠক, ২০০-রও বেশি আন্দোলনকারীর মৃত্যু, প্রজাতন্ত্র দিবসে হিংসা- সব মিলিয়েই দেখতে দেখতে ১০০ দিন পূর্ণ হল কৃষক আন্দোলনের(Farmers Protest)। এই দিনটিকেই “কালা দিবস” হিসাবে পালন করতে শনিবার পাঁচঘণ্টার জন্য কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল আন্দোলনকারী কৃষকরা।

এদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৪টে অবধি ১৩৫কিমি দীর্ঘ কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে (Kundli-Manesar-Palwal Expressway) আটক করে প্রতিবাদ প্রদর্শন করবেন কৃষকরা। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, হাইওয়ের সমস্ত টোলপ্লাজাগুলিতেও দখল করে সমস্ত গাড়িকে বিনামূল্যে যাতায়াত করতে দেওয়া হবে। জানানো হয়েছে, সিংঘু সীমান্তে আন্দোলনকারী কৃষকরা কুণ্ডলীর টোল প্লাজাগুলি আটকে দেবে। গাজিপুর ও তিকরি সীমান্তে অবস্থানকারী কৃষকরা দাসনা ও বাহাদুরগড়ের টোল প্লাজাগুলিতে দখল নেবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, দমকলের মতো জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িগুলিকে আটকানো হবে না।

কৃষক আন্দোলনের ১০০দিন পূরণ হওয়ায় এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত(Rakesh Tikait)। তিনি বলেন, “আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। যতদিন না সরকার আমাদের দাবি শুনবে না, ততদিন আমরা কিছুতেই পিছু হটব না।”

আরও পড়ুন:‘সঠিক মানুষ এবার সঠিক দলে এলেন’, দীনেশকে পদ্ম পতাকা দিয়ে মন্তব্য নাড্ডার

গতবছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রের তরফে নয়া কৃষি আইন (Farm Laws) চালু করার পরই প্রতিবাদে সরব হন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা। প্রথমে রাজ্যগুলির মধ্যেই আন্দোলন সীমাবদ্ধ থাকলেও নভেম্বর মাসে আন্দোলনের আঁচ এসে পৌঁছয় দিল্লিতে। পুলিশের লাঠিচার্জ, জলকামান, কেটে দেওয়া রাস্তা পেরিয়েই ২৬ নভেম্বর দিল্লি পৌঁছন আন্দোলনকারী কৃষকরা। সময় পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে সীমান্ত। দিল্লির তিন গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত- সিংঘু, গাজিপুর ও তিকরিতে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন লক্ষাধিক কৃষকরা।

প্রথম থেকেই কৃষকদের মুখ্য দাবি ছিল তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদিত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (Minimum Support Price) আইনী গ্যারান্টির দাবিতেও সরব হয় কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে ১১ দফা বৈঠক হলেও শেষ অবধি কোনও সমাধান মেলেনি। কেন্দ্রের তরফে এক থেকে দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও কৃষকরা আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় থাকে।

প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ট্রাক্টর মিছিল কেন্দ্র করে দিল্লিতে যে হিংসা জড়ায়, তারপরই “ব্যাকফুটে” চলে যায় কৃষক আন্দোলন। উত্তর প্রদেশ সরকার আন্দোলনস্থল ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হলেই বাড়ির পথে রওনা দেন কৃষকরা। কিন্তু ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইতের কান্নাভেজা আবেদনেই ফের আন্দোলনস্থলে ফিরে আসেন।

প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনা মাথায় রেখেই সীমান্তগুলিতে বজ্র আঁটুনি তৈরি করে দিল্লি পুলিশ(Delhi Police)। সিমেন্টের ব্যারিকেড, পেরেক, কাঁটাতারে ঘিরে ফেলা হয় সিংঘু ও গাজিপুর সীমান্ত। তবুও পিছু হটেননি কৃষকরা। আন্দোলনকারীদ্র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী অক্টোবর মাস অবধি কেন্দ্রকে সময় দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে আইন প্রত্যাহার না করা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।

আন্তর্জাতিক মহলেরও নজর কেড়েছে কৃষক আন্দোলন। মার্কিন পপ গায়িকা রিহানা(Rihanna), পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ (Greta Thunberg) কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরব হওয়ার ডাক দেয়। গ্রেটা থুনবার্গের শেয়ার করা টুলকিট (Toolkit) নিয়েও শুরু হয় নতুন বিতর্ক। দেশদ্রোহীতা ও খলিস্তানি আন্দোলনে মদত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় পরিবেশকর্মী দিশা রবিকে। পরোয়ানা জারি করা হয় নিকিতা জেকব ও শান্তনুর নামেও।

আরও পড়ুন: ‘আর সস্তা নই’, কী পাওয়া গিয়েছে আয়কর হানায়, জানালেন স্বয়ং তাপসী