১৭ নভেম্বর, ২০১৯। চিনে প্রথম করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ল। চিনের সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমনটাই জানা যায়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে সেকথা জানাতে ডিসেম্বর অবধি সময় নিয়েছিল বেজিং। তারপর চিনের যে ছবি বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছতে শুরু করল, তা হলিউড ছবির থেকে কিছু কম নয়। চিনের ধু ধু শহর, আর ঘরবন্দি মানুষের সেসব ছবি ভারতীয়রা তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে ব্যস্ত। তবে দুঃস্বপ্ন তখনও ছোঁয়নি ভারতের মাটি।
জানুয়ারিটাও কেটে গেল। সবাই ভেবেছিল নিপা, জিকা কিংবা ইবোলার মত এবারও হয়ত বেঁচে যাবে ভারত। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ৩০ জানুয়ারি দুঃস্বপ্নটাই সত্যি হল। ভারতেও ধরা পড়ল কোভিড ১৯ ভাইরাস। চিনের উহানে পাঠরত বছর ২০-র এক ছাত্র সদ্য ফিরলেন কেরলের বাড়িতে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তাঁর শরীরে প্রথম ধরা পড়ল মারণ ভাইরাসের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন: What Bengal Thinks Today LIVE: একুশের ভোটেই বাংলায় সরকার গড়বে বিজেপি: রাজনাথ সিং
সে মনে হয়েছিল, একজনই তো! কিন্তু, সপ্তাহ ঘুরল না। আরও ৪ জনের শরীরে ধরা পড়ল সেই ভাইরাস। মাসখানেকের মধ্যে আর উল্লেখযোগ্য কোনও আপডেট নেই। তখনও জানা ছিল না, মৃত্যু অপেক্ষা করছে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের জন্য। কয়েকদিনের মধ্যেই ‘হরর’ ছবি নেমে এল বাস্তবে। প্রত্যেকদিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষের মৃত্যু দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠল ভারত। কাজ হারাল কয়েক লক্ষ মানুষ। পরিয়ায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবি আর্থ-সামাজিক অবস্থার হতশ্রী ছবিটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে থাকল। আবার এক শ্রেণীর মানুষ শিখল নতুন শব্দবন্ধ ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম।’
আরও পড়ুন: জুন মাসেই ভারতে কোভোভ্যাক্স! টুইটে আশাবাদী সিরামকর্তা
লকডাউন, মাস্ক, স্যানিটাইজারে এক বছর কাটিয়ে কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত?
৩০ জানুয়ারি, ২০২০ -তে যে আতঙ্ক শুরু হয়েছিল, ৩০ জানুয়ারি-২০২১-এ সেখানে পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল। শনিবার দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩,০৮৩। এদিনই সিরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়াটর সিইও আদার পুনাওয়ালা আরও একটি ভ্যাকসিনের কথা জানিয়েছেন। শনিবার তিনি জানান, ব্রিটেনে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে করোনা সংক্রমণ রুখতে ৮৯.৩ শতাংশ কার্যকরী নতুন ভ্যাকসিন কোভোভ্যাক্স।
সুতরাং, লড়াই জারি আছে এবং দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে নতুন সকালের প্রত্যাশা করাই যায়।