গুয়াহাটি: দেশের পশ্চিমাঞ্চল যখন ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ (Biparjoy) -এ বিধ্বস্ত, তখন বানভাসি (Flood) অবস্থা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বন্যা-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে অসমে (Assam)। কমপক্ষে ৩টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বুলেটিন প্রকাশ করেছে অসম প্রশাসন। ৩টি জেলায় প্রায় ২৯ হাজার মানুষ বানভাসি বলে বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (ASDMA) তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধেমাজি, ডিব্রুগড় এবং লখিমপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই তিন জেলায় ২৮,৮০০-র বেশি মানুষ বন্যা-বিধ্বস্ত। ৩টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লখিমপুর জেলার। কেবল এই জেলাতেই ২৩,৫০০ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। এছাড়া ডিব্রুগড় জেলায় ৩,৮০০-র বেশি মানুষ এবং ধেমাজি জেলায় প্রায় ১৫০০ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার পর্যন্ত অসমের দুই জেলায় ২১ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সেই সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে বন্যা-বিধ্বস্ত জেলার বাসিন্দাদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বিধ্বস্ত লখিমপুর জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি।
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বন্যায় ফসলেরও যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। ASDMA-র তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে গোটা অসমে ২৫টি গ্রাম এবং ২১৫.৫৭ হেক্টর চাষজমি জলের নীচে রয়েছে। বিশ্বনাথ, বঙ্গাইগাঁও, ডিব্রুগড়, জোরহাট, লখিমপপু, মোরিগাঁও, সোনিতপুর এবং উদলগুড়ি জেলায় ভূমিক্ষয় শুরু হয়েছে। রাস্তা, ব্রিজ একেবারে জলের তলায় চলে গিয়েছে। কাচার ও কামরূপ শহরতলিতে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে।
আশার কথা, এখনও পর্যন্ত অসমের কোনও নদী বিপদসীমার উপরে যায়নি বলে ASDMA জানিয়েছে। তবে আগামী পাঁচদিবন ভারী বৃষ্টিপাত চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আগামী তিনদিন বিভিন্ন জেলায় কমলা সতর্কতা ও পরের দু-দিন হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। ফলে নদীগুলির জল বিপদসীমার উপরে উঠলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।