নয়া দিল্লি: তাঁদের সামনে মোদী সরকারের ৮ বছর পূর্তিকে সামনে রেখে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। প্রথমেই তাদের লক্ষ্য দুর্বলতা দূর করা। ২০১৯ সালে মোট ৩৫৩ টি আসন জিতেছিল বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। অর্থাৎ, বাকি প্রায় ১৮০টিরও বেশি আসনে তারা পরাজিত হয়েছিল। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে এই সকল পরাজিত আসনগুলিতে, একেবারে বুথ স্তরে শক্তি বাড়ানোরই দিকে নজর দিচ্ছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে বুধবার থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, দলীয় সাংসদ, বিধায়কদের ২০১৯-এ হেরে যাওয়া লোকসভা এলাকাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। নেতা-মন্ত্রীরা সেখানকার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দলের শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করবেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
সূত্রের খবর, ২৫ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই প্রচার অভিযান চলবে। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যাবেন অন্তত ১৪০টিরও বেশি লোকসভা কেন্দ্রে। পাশাপাশি, বুথ স্তরে শক্তি বাড়াতে প্রত্যেক বিজেপি সাংসদের অধীনে ৩০ জন কর্মীর একটি করে দল তৈরি করা হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১০০ টি দুর্বল বুথে দলের শক্তি বৃদ্ধি করার দায়িত্ব থাকবে তাদের উপর। একই ভাবে, দলের প্রত্যেক বিধায়ককে ২৫ টি করে বুথ এলাকায় দলীয় কার্যক্রমের তদারকি করতে হবে। এর জন্য তাঁদের হাতে ১০ জন কর্মীর একটি করে দল থাকবে। এর ফলে মোট ৭৭,৮০০ টি বুথে অন্তত দলীয় কার্যক্রম এবং সদস্য সংখ্যার দিক থেকে শক্তিশালী হবে দল, এমনটাই আশা করছে বিজেপির শীর্ষ নেতত্ব। সেই সঙ্গে, যে রাজ্যগুলিতে দলের ব্যাপক সম্প্রসারণ প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে, সেই রাজ্যগুলির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য চারজন কেন্দ্রীয় নেতার একটি বিশেষ দল থাকবে।
আগামী নির্বাচনে মূল্যবৃদ্ধিই মোদী সরকারের প্রধান শত্রু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, মূল্যবৃদ্ধির থাবা থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে মোদী সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, প্রচারে সেই বিষয়গুলি তুলে ধরতে চলেছে বিজেপি। নেতা-মন্ত্রী একের পর এক সাংবাদিক বৈঠক এবং প্রচার সভায় ব্যাখ্যা করবেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কাঁচা তেলের দাম বেড়েছে বলেই, ভারতকে এই নজিরবিহীন মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে, জ্বালানি তেলের আবগারি শুল্ক কমিয়ে, গম-চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিচ্ছে মোদী সরকার।
মোদী সরকারের ৮ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে কীভাবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এক বৈঠক করেন। নয়া দিল্লিতে দলের সদর দফতরে হওয়া এই বৈঠকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ২০২৪ সালের নির্বাচনকে মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের বৃদ্ধি সংক্রান্ত কর্মসূচির উপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মোদী সরকারের আট বছরের সাফল্যকে, বিশেষ করে বিভিন্ন জনকল্যানমূলক প্রকল্পের প্রচার কীভাবে করা হব, সেই বিষয়েও আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।