করোনাকালে ৪ কোটি প্রবীণ নাগরিকের কাছ থেকে পুরো ভাড়া উসুল করল রেল
Indian Railway: ভারতের কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG)এর ২০১৯ এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী প্রবীণ যাত্রীদের তরফে 'Give it up' পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া খুব বেশি উৎসাহজনক ছিল না। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মোট ৪.৪১ কোটি প্রবীণ নাগরিক যাত্রীদের মধ্যে ৭.৫৩ লাখ মানুষ (১.৭ শতাংশ) যাত্রী ৫০ শতাংশ ছাড়ের বিকল্প বেছে নিয়েছেন আর ১০.৯ লাখ (২.৪৭ শতাংশ) যাত্রীরা ১০০ শতাংশ ছাড় ছেড়ে দিয়েছেন।
মার্চ ২০২০-তে করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে রেলওয়ে দ্বারা ছাড় নিষিদ্ধ করার পর থেকে প্রায় ৪ কোটি প্রবীণ নাগরিকদের রেলযাত্রার পুরো ভাড়া চোকাতে হয়েছে। তথ্যের অধিকার আইনে অধীনে চাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই খবর সামনে এসেছে।
মধ্য প্রদেশ নিবাসী চন্দ্রশেখর গৌড়ের করা একটি প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ে জানিয়েছে ২২ মার্চ ২০২০ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১ এর মধ্যে ৩,৭৮,৫০,৬৬৮ জন প্রবীণ নাগরিক রেল যাত্রা করেছেন। এই সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণ চলা লকডাউনকে মাথায় রেখে বেশকিছু মাস ট্রেন চলাচল বন্ধ থেকেছে। মার্চ ২০২০ থেকে স্থগিত হওয়া ছাড় আজও পর্যন্ত স্থগিতই রয়েছে।
এই হিসেবে ভাড়ায় পাওয়া যেত ছাড়
প্রবীণ নাগরিকদের ব্যাপারে মহিলারা ৫০ শতাংশ ছাড় পান, অন্যদিকে পুরুষরা ৪০ শতাংশ ছাড় পান। এই শ্রেণিতে মহিলাদের বয়স ন্যূনতম ৫৮ বছর আর পুরুষদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৬০ বছর। আগামী সপ্তাহে কলকাতায় ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া প্রবীণ নাগরিক তাপস ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আমাদের যে ছাড় দেওয়া হত তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল আর সেই মানুষদের জন্য ভীষণ সাহায্যপূর্ণ ছিল যারা এই ভাড়া বহন করতে পারবেন না। বেশকিছু বাড়িতে প্রবীণ নাগরিকদের অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে মনে করা হয়, তাদের নিজস্ব কোনও আয় থাকে না। এই ছাড়ে তাঁদের কোথাও যাতায়াতে সুবিধা হয়। নিয়মিত ট্রেন পরিষেবা পরিচালনা করার সঙ্গে প্রবীণ নাগরিকদের দেওয়া ছাড় বহাল রাখা উচিৎ। বেশিরভাগ প্রবীণই সম্পূর্ণ ভাড়া দিতে পারেন না।’
২০১৭য় শুরু হয়েছিল ‘ছাড় ফিরিয়ে দেওয়ার’ বিকল্প
গত দু দশকে রেলওয়ে দ্বারা দেওয়া এই ছাড় নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে, যার মধ্যে বেশকিছু কমিটি এই ছাড় বন্ধ করার সুপারিশ করেছিল। এর ফলাফল হয়, জুলাই ২০১৬য় রেলওয়ে টিকিট বুক করার সময় প্রবীণদের দেওয়া এই ছাড়কে বিকল্প করে দেওয়া হয়। জুলাই ২০১৭য় রেলওয়ে প্রবীণদের জন্য ‘ছাড় ফিরিয়ে দেওয়ার’ বিকল্প যোজনাও শুরু হয়। গত মাসে একটি চিঠিতে মাদুরাইয়ের সাংসদ এস ভেঙ্কটেশ রেলমন্ত্রীর কাছে রেল যাত্রার জন্য যাত্রীদের দেওয়া ছাড়তে বহাল করার আবেদন করে বলেন, এটা এই দেশে প্রবীণদের জন্য আবশ্যক, যেখানে ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে।
মাত্র ১.৭ শতাংশ যাত্রীরাই নেননি এই ছাড়
ভারতের কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG)এর ২০১৯ এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী প্রবীণ যাত্রীদের তরফে ‘Give it up’ পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া খুব বেশি উৎসাহজনক ছিল না। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মোট ৪.৪১ কোটি প্রবীণ নাগরিক যাত্রীদের মধ্যে ৭.৫৩ লাখ মানুষ (১.৭ শতাংশ) যাত্রী ৫০ শতাংশ ছাড়ের বিকল্প বেছে নিয়েছেন আর ১০.৯ লাখ (২.৪৭ শতাংশ) যাত্রীরা ১০০ শতাংশ ছাড় ছেড়ে দিয়েছেন। রেলওয়ে গত দশদিনে নিজেদের এমন কিছু পরিষেবা বহাল করেছে, যা তারা করোন মহামারীর সমস্যাকে মাথায় রেখে বন্ধ করে দিয়েছিল। এর মধ্যে ট্রেনগুলি থেকে ‘বিশেষ’ ট্যাগ সরিয়ে নেওয়াও শামিল রয়েছে। এর ফলে টিকিটের দাম কমেছে। ট্রেনে রান্না করা গরম খাবার পরিবেশন করা আবারও শুরু করা হয়েছে। তবে ছাড় বহাল করা আর বেডরোল দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনও বন্ধই রয়েছে।