নয়া দিল্লি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে দাপট বাড়ছে ডিপফেকের। সম্প্রতি ডিপফেক ভিডিয়োর জালে জড়াতে দেখা গিয়েছে রশ্মিকা মান্দানা, ক্যাটরিনা কইফের মতো নামজাদা তারকাদের। দেশজুড়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। তবে শুধু যে তারকারা বিপদে পড়ছেন এমনটা নয়। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভয় বাড়ছে আম-আদমিদের জন্যও। এরইমধ্যে এবার ডিপফেক প্রতারণার শিকার হলেন, কোল ইন্ডিয়ার এক প্রাক্তন আধিকারিক। খোয়ালেন ৪০ হাজার টাকা।
সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত জুলাই মাসের ৯ তারিখ। ওই দিন সকালে রোজকার তো নিজের বাড়িতে বসে ফোন ঘাঁটছিলেন রাধাকৃষ্ণান পি এস নামে কোল ইন্ডিয়ার ওই আধিকারিক। তিনি জানাচ্ছেন তখনই তাঁর কাছে অচেনা একটি নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছু মেসেজ আসতে থাকে। কিছু সময় পরে আসে এক ভিডিয়ো কলও। উল্টো দিকে যে ব্যক্তি ছিলেন তিনি নিজেকে ভেনু কুমার বলে দাবি করেন। এদিকে ভেনু কুমার বলে রাধাকৃষ্ণানের এক বন্ধুও রয়েছে। চার দশক ধরে তিনি তাঁকে চেনেন। কিন্তু, কথা হয় না দীর্ঘদিন। বহুদিন পর আচমকা তাঁর ফোন পেয়ে খানিক আবেগাপ্লুত হয়ে যান ওই প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক।
এদিকে এরইমধ্যে তাঁর ফোনে পুরনো দিনের তাঁদের কিছু ছবি আসতে থাকে। তাঁদের দু’জনের পরিচিত কিছু বন্ধুদের নিয়ে গল্পও শুরু হয়। টেক্টটে কথা বলতে বলতেই আচমকা তাঁর কাছে একটি ভিডিয়ো কল এসে যায়। সেখানেই দেখা যায় তাঁর বন্ধুকে। ভিডিয়ো কলেই রাধাকৃষ্ণানের থেকে ওই ব্যক্তি ৪০ হাজার টাকা চেয়ে বসেন। বলেন, তাঁর বোনের চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। সে কারণেই জরুরি ভিত্তিতে এই টাকার প্রয়োজন রয়েছে।
তাঁর কথা শুনে টাকা দিতে আর দেরি করেননি কোল ইন্ডিয়ার ওই প্রাক্তন আধিকারিক। গুগল পে দিয়ে টাকাটা দিয়ে দেন। এরপর ওই বন্ধু আরও ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁর কাছে। তখনই সন্দেহ হয় রাধাকৃষ্ণানের। কিছু সময়েই পরেই বুঝে যান বন্ধুর ছদ্মবেশে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন তিনি। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়। চার মাস তদন্তের পর, কোঝিকোড সিটি পুলিশ জানতে পারে ডিপফেক টেকনোলজি ব্যবহার করে ওই ব্যক্তি বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার জালিয়াতেরা। খোঁজ মিলেছে একটি চক্রের। ইতিমধ্যেই গুজরাটের মেহসানা থেকে শাইক মুর্তুজামিয়া হায়াত ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও আহমেদাবাদের প্রধান অভিযুক্ত কৌশল শাহ এখনও পলাতক বলে জানতে পারা যাচ্ছে।