নয়া দিল্লি: গোয়া থেকে কলকাতা। সড়কপথে যাতায়াত করলে ভৌগলিক দূরত্ব প্রায় ২১০০ কিলোমিটার। কিন্তু এই দুই রাজ্যের রাজনৈতিক ব্যবধান সম্প্রতি কমে গিয়েছে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরিও (Luizinho Faleiro)। যা একাধারে কংগ্রেসের জন্য ধাক্কা তো বটেই, সেই সঙ্গে জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বড় ঘটনাও অবশ্যই। কিন্তু কার উদ্যোগে, বা ব্যবস্থাপনায় সেই সুদূর গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যোগ দিলেন গঙ্গাপাড়ের এই দলে? এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই রহস্য ফাঁস করে লুইজিনহো জানিয়েছেন, এই যোগদানের পেছনেও রয়েছেন সেই ব্যক্তি। প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)।
বঙ্গ রাজনীতিতে পিকে নামটা এখন এতটাই চর্চিত যে তাঁর বিষয়ে আলাদা করে কিছু লেখার প্রয়োজন পড়ে না। তবে তৃণমূলকে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যেতে পিকে যে বিরাট ভূমিকা নিচ্ছেন, সেটা কার্যত পরিষ্কার হয়ে এ দিনের সাক্ষাৎকারের পর। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লুইজিনহো জানান, প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাক-ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে শামিল হওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আগে দেখা না হলেও তাঁদের সঙ্গে কথা হওয়ার পর তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জাতীয় স্তরে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো মনে হয়েছে লুইজিনহোর। তাঁর কথায়, “আপনারা হয়তো বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আগে কখনই আমার সঙ্গে ওঁদের দেখা হয়নি। কিন্তু ওঁরা দারুণ। শুধুমাত্র তৃণমূলের নেতৃত্ব হিসেবে ওঁরা ভাল এমনটা নয়। বরং জাতীয় স্তরেও জন্যও ওঁরা ভাল নেতা। তবে ওঁদের সঙ্গে দেখা করিনি। আমি টিম আইপ্যাক এবং প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। পাকা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই মুখোমুখি দেখা হয়েছিল।”
তবে রাজনৈতিক জীবনের একটা দীর্ঘ সময় কংগ্রেসে কাটিয়ে সেই দল ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত যে মোটেও সহজ ছিল না সেটা বলতেও লুইজিনহো দ্বিধা করেননি। কিন্তু কংগ্রেসের বর্তমানে যা অবস্থা, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এ বাদে তাঁর কাছে আর কোনও বিকল্পও ছিল না, বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। লুইজিনহো বলেন, “কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্ত আমার জন্য খুব, খুব কঠিন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোয়া এবং এই দেশের স্বার্থে বিজেপিকে পরাস্ত করতে আমার কাছে সামনে এগোনর জন্য এটাই একমাত্র রাস্তা ছিল। এ বার আমি আইপ্যাকের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।”
উল্লেখ্য, বুধবারই কলকাতায় এসে সদলবদলে তৃণমূলে শামিল হন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরিও। তাঁর সঙ্গে গোয়া প্রদেশ কংগ্রেসের আরও বেশ কয়েকজন সদস্য় তৃণমূলে নাম লেখান। কলকাতা থেকে গোয়া ফিরে গিয়ে এ দিন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দু শেখর রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Amarinder Singh: ‘বিজেপিতে যাচ্ছি না, তবেও কংগ্রেসের সঙ্গেও আর নয়’, সাফ কথা ‘অপমানিত’ অমরিন্দরের