মুম্বই: একসময়ে তাঁর ভয়ে কাঁপত গোটা মুম্বই। সেই বালাসাহেব ঠাকরে (Bala Saheb Thackeray) নেই, কিন্তু রয়েছে তাঁর দল শিবসেনা(Shiv Sena)। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দলের অন্দরে যে ফাটল ধরেছিল, তার জেরেই শিবসেনা নাম-পরিচয় দুই-ই হারাল। শিবসেনার নাম ও তীর ধনুক প্রতীক কার থাকবে, তা নিয়েই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) ও একনাথ শিন্ডের (Eknath Shinde) শিবির। দীর্ঘ লড়াইয়ে অবশেষে জয় হল একনাথ শিন্ডে শিবিরেরই। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) তরফে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর শিবিরকেই শিবসেনার নাম ও প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হল। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পরই ফের সরব হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। শিন্ডে শিবিরকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়ে বললেন, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।
শিবসেনার অন্দরে ভাঙন, ৪০ বিধায়ক নিয়ে একনাথ শিন্ডের ভিন রাজ্যের রিসর্টে ঠাই নেওয়া এবং শেষে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিন্ডে শিবিরের সরকার গঠনের পর থেকেই বিগত আট মাস ধরে শিবসেনার নাম ও প্রতীক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছিল। দুই পক্ষই নিজেদের ‘আসল শিবসেনা’ বলে দাবি করেছিলেন। দলের নাম ও প্রতীক নিয়ে লড়াই নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে আদালত অবধি গড়ায়। শেষে গতকাল নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, একনাথ শিন্ডের শিবির এবার থেকে শিবসেনা নামটি ব্যবহার করতে পারবে। তাদের দলীয় প্রতীক হিসাবে তীর ধনুক চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে। অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরের শিবিরের নাম হবে শিবসেনা উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে। তাদের প্রতীক হবে জ্বলন্ত মশাল।
কমিশনের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “ওরা (একনাথ শিন্ডের শিবির) শিবসেনার প্রতীক চুরি করে নিয়েছে। তবে আমরাও হার মানব না, আশা ছাড়ব না এবং লড়াই জারি রাখব। আপাতত যা চুরি করেছে, তা নিয়েই খুশি থাক শিন্ডে। মনে রাখবেন, একবার যে বিশ্বাসঘাতকতা করে, সে সর্বদা বিশ্বাসঘাতকই রয়ে যায়।”
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেও ঠাকরে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে। এবার প্রধানমন্ত্রীর লালকেল্লা থেকে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করা উচিত যে দেশে গণতন্ত্র মৃত। এবার একনায়কতন্ত্র চলবে”। নিজের বাড়ি মাতোশ্রীতেই দাঁড়িয়ে উদ্ধব সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “আসল তীর ধনুক আমাদের কাছেই রয়েছে। ওদের কাছে তো কেবল খাতায় কলমে অধিকার।”
উল্লেখ্য, শিবসেনার অন্দরেই বিদ্রোহ ঘোষণার পরে একনাথ শিন্ডের সঙ্গে যারা গিয়েছিলেন, এমন ১৬ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করার আবেদনও জানানো হয়েছিল আদালতে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে এখনও এই মামলায় রায়দান বাকি। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করায়, তা অনুচিত বলেই অ্যাখ্যা দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে।